একসময় ধারণা করা হতো, হার্ট অ্যাটাক কেবল বয়স্কদের হয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বাড়ছে। বিশেষ করে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই শুধু বয়স্করা নয় অল্প বয়সেই হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে কমবয়সীদের মানতে হবে সকল নিয়ম। এসব বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। আসুন জেনে নিই কী কারণে অল্প বয়সেই ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের।
হার্ট অ্যাটাক যে কারণে হয়
শরীরের শিরা-উপশিরায় রক্ত চলাচল ঠিকমতো না হলে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা সৃষ্টি হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। যখন হৃৎপিণ্ডে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছাতে পারে না তখন শিরায় চাপ পড়ে এবং এতে রক্তনালী ব্লক হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
জীবনযাপনে অনিয়ম
বেশিরভাগ অসুস্থতার পেছনে রয়েছে অনিয়মিত জীবনযাপন। তরুণরা বর্তমানে বাইরের খাবারের প্রতি বেশি নির্ভরশীল, রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়ার মতো বদভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের অভাবে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এসব অনিয়ম হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল
অনেকে তরুনরা বুঝতে না পেরে ধূমপান ও অ্যালকোহলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছেন। একবার এসব অভ্যাস গড়ে উঠলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু সিগারেট ও অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলো ধমনীর কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে, রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে এবং হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ ফেলে যার কারনে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবারের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়ছে, যা শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে রক্তনালী সরু হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয় এবং হার্ট অ্যাটাক, করোনারি আর্টারি ডিজিজ ও অন্যান্য হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
অনেকে শারীরিক সমস্যার প্রতি যতটা গুরুত্ব দেন মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ততটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হার্টের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় বিরূপ প্রভাব ফেলে। বর্তমানে তরুণরা পড়াশোনা, চাকরি, পারিবারিক দায়িত্বসহ নানা কারণে অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। এই অতিরিক্ত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তাও হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা এবং মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করলেই অনেকাংশে কমানো সম্ভব অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
আরও পড়ুন:: ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পড়ে যাওয়ার অনুভূতি? জানুন এর কারণ এবং সমাধান।