স্বামীর ঘরে উঠতে ঘরের বারান্দায় দুদিন ধরে অনশন করছেন সিলেটের বিশ্বনাথের এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে রামপাশা ইউনিয়নের রহমাননগর গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে, কাতার প্রবাসী স্বামী আরিফ উদ্দিনের (২৫) ঘরের বারান্দায় বসে অনশন করছেন স্ত্রী রিফা বেগম (১৮)।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও তিনি স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও তাঁর অনড় অবস্থানের কারণে ব্যর্থ হন।
অনশনকারী রিফা বেগম একই গ্রামের সমুজ আলীর মেয়ে।
রিফা বেগম জানান, তার স্বামী আরিফ আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ছিলেন। তাঁর সাথে প্রথমে পরিচয়, তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং একসময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি আরিফ জানতেন না।
গত ৪ জুলাই আরিফ রিফার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি বিষয়টি আরিফকে অবগত করলে আরিফ বিপাকে পড়ে যান। পরে, স্থানীয় কয়েকজনের উপস্থিতিতে কাজী ডেকে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু, উভয় পরিবারের কেউই বিষয়টি মেনে নেননি। দু’জনকে বিতাড়িত করা হয় পরিবার থেকে। এতে তারা স্থানীয় এক কলোনিতে বসবাস শুরু করেন।
চলতি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত তারা একসঙ্গে ছিলেন। এরপর দু’দিন আরিফ কলোনিতে না ফেরায় রিফা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তিনি কাতার পাড়ি জমিয়েছেন। এরপর, গত মঙ্গলবার সকালে স্বামীর ঘরে উঠতে তাঁর বাড়িতে গেলে রিফাকে তারা ঘরে উঠতে দেননি। এ সময় তিনি ঘরের বারান্দায় অনশনে বসেন।
আরিফের বড় ভাই মিছবাহুর রহমান জানান, ‘আমাদের অবাধ্য হয়ে সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে করায় আমার পিতা স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে আরিফকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন। তাঁর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই মেয়ে এখন আমরা ঘরে উঠতে দেবো কেন?’
রামপাশা ইউনিয়নের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের সদস্য মখন মিয়া বলেন, ‘শুনেছি, পারিবারিকভাবে আরিফকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে এবং খবরটি শোনে মেয়েটি মঙ্গলবার সকাল থেকে তাদের বাড়িতে অনশন করছে। ছেলের পরিবার আমাকে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা বসবেন। তবে, এখন পর্যন্ত তারা তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি।’
কথা হলে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। মেয়েটি স্বামীর ঘরে উঠতে অনড়। তবে, তিনি যদি এই বিষয়ে থানা পুলিশের সহায়তা চান, আমরা আইনি সহায়তা দেবো।