মিয়ানমার নৌবাহিনী বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে মাছ ধরতে যাওয়া ৬০ মাঝিমাল্লাসহ বাংলাদেশি ৬টি ট্রলার অপহরণ করেছে। এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনায় এক জেলে নিহত হয়েছেন এবং তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ট্রলার মালিকরা জানান, বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে মৌলভির শিলের মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জেলের নাম ওসমান গণি (৩২)। তিনি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ কোনাপাড়ার গ্রামের মৃত বাচা মিয়ার ছেলে। আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। হতাহতরা শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়ার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে বলে জানা গেছে।
অপহৃত ৬টি ট্রলারের মালিক হলেন শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তার ভাই আতাউল্লাহ এবং উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোতে মোট ৬০ জন মাঝিমাল্লা ছিলেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বুধবার বিকেল আড়াইটার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমার নৌবাহিনী গুলি চালায় এবং ৬টি ট্রলার ও ৬০ জন জেলেকে আটক করে। এ সময় গুলির ঘটনায় একজন নিহত ও দুজন আহত হন। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে একটি নৌকাসহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বর্তমানে কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে একটি নৌকা, নিহতের মরদেহ এবং ১১ জন জেলে শাহপরীর দ্বীপের জেটিতে অবতরণ করেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অন্য ৫টি ট্রলারসহ অন্যান্য জেলেদের মুক্তি দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগের ২৮৯ জন পাবেন পুলিশে চাকরি
ট্রলার মালিক সাইফুল জানান, বুধবার সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের ধাওয়া করে গুলি চালায়। এতে তার ট্রলারের চার জেলে গুলিবিদ্ধ হন। যার মধ্যে একজন মারা যান। পরে ৫টি ট্রলারসহ মাঝিমাল্লাদের মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ তার ট্রলারটি মুক্তি পেয়েছে। নিহত এবং আহত জেলেদের নিয়ে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। তবে এটি এখনও ঘাটে পৌঁছায়নি।
কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লুৎফুল লাহিল মাজিদ জানান, গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন এবং একজন মারা গেছেন। আহত দুজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।