নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের বিশ্বনাথের তেলিকোনা এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হোসাইনকে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে এই নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে বিকেলে থানার পুলিশ ও সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের পক্ষ থেকে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের জেলা সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজার প্রতিনিধি হিসেবে শাবির শিক্ষার্থী আজিজুল হাসান নাইম সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা কোনভাবেই দুর্নীতি মেনে নেব না। সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। থানার এসআই অনিক জানিয়েছেন যে ইউএনও স্যারের সঙ্গে বসে অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি সমাধান দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে সঠিক একটি সিদ্ধান্ত আসবে। যদি না আসে, তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব।,
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হোসাইন এবং উপাধ্যক্ষ মুখলিছুর রহমানের মধ্যে গত পাঁচ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। উভয়েই তেলিকোনা গ্রামের বাসিন্দা এবং তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। গত সপ্তাহে অধ্যক্ষ পক্ষের শিক্ষিকা জুসনা বেগম ও উপাধ্যক্ষ পক্ষের শিক্ষক আলতাফুর রহমানের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বেতন নিয়ে বিতর্কের কারণে এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন :: সিকৃবিতে আন্দোলন অব্যাহত : শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
এ নিয়ে রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে, অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী । যার ফলে ক্লাস নিতে পারেননি শিক্ষরা। খবর পেয়ে, বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এসআই অনিক বড়ুয়া ও সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সাইদুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সিলেটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা এসময় উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হোসাইন জানিয়েছেন, তিনি কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী প্রতিপক্ষরা সিলেট থেকে ছাত্রদের এনে তাকে পদত্যাগের জন্য হুমকি এবং আল্টিমেটাম প্রদান করছেন। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টিরও বেশি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সিলেটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা জানিয়েছেন, শাবির শিক্ষার্থী আজিজুল হাসান নাইমসহ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে তিনি তার প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিশ্বনাথ থানার এসআই অনিক বড়ুয়া বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাদ্রাসার সমস্যার সমাধানে তিনি তার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে পালন করছেন। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসে তিনি ইউএনও’র কার্যালয়ে গিয়েছেন, কিন্তু ইউএনওকে পাননি। সোমবার আবারও উপজেলা অফিসে গিয়ে ইউএনও’কে বিষয়টি জানাবেন এবং ইউএনও’র মাধ্যমে পক্ষদ্বয়কে ডেকে এনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবেন।