ঘুমের মধ্যে লালা পড়া: সাধারণ অভ্যাস নাকি মারাত্মক রোগের আগাম সংকেত?

Ayas-ali-Advertise
ঘুমের মধ্যে লালা পড়া: সাধারণ অভ্যাস নাকি মারাত্মক রোগের আগাম সংকেত?
ছবি-সংগৃহীত।
ঘুমের মধ্যে লালা পড়া: সাধারণ অভ্যাস নাকি মারাত্মক রোগের আগাম সংকেত?
ছবি-সংগৃহীত।
Facebook
Twitter
WhatsApp

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর সকালে উঠে অনেকেই দেখেন বালিশ ভেজা— কারণ ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়েছে। বিষয়টিকে অনেকেই সাধারণ ঘটনা মনে করেন, কেউ কেউ আবার মজা করেও এড়িয়ে যান। তবে চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত এমনটা হলে এটি স্নায়ুর সমস্যা, স্ট্রোক কিংবা স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো গুরুতর রোগের প্রাথমিক সতর্কসংকেত হতে পারে।

সব সময়ই বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। তাই ঘুমের সময় লালা ঝরার কারণ এবং সম্ভাব্য বিপদের লক্ষণ সম্পর্কে জানা জরুরি।

কেন ঘুমের সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ে?

মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া: নাক বন্ধ থাকা, সাইনাসের সমস্যা বা সর্দির কারণে অনেকেই রাতে মুখ খুলে শ্বাস নেন। এতে লালা সহজেই বাইরে বেরিয়ে আসে।

অতিরিক্ত লালা উৎপাদন (হাইপারসালিভেশন): কারও কারও স্বাভাবিকভাবেই লালার নিঃসরণ বেশি হয়। দাঁতের সমস্যা, মাড়ির প্রদাহ বা পাকস্থলীর অ্যাসিডের সমস্যাও এর কারণ হতে পারে।

ভুল ঘুমের ভঙ্গি: কাত হয়ে বা উপুড় হয়ে ঘুমালে মাধ্যাকর্ষণের কারণে লালা বাইরে পড়ে যেতে পারে।

টনসিল বা অ্যাডিনয়েডের সমস্যা: টনসিল বা অ্যাডিনয়েড বড় হলে নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা তৈরি হয়। তখন মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার কারণে লালা ঝরতে পারে।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ও স্নায়ুবিষয়ক ওষুধ লালা নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে রাতে লালা পড়া বেড়ে যায়।

কোন কোন রোগের সতর্কসংকেত হতে পারে?

স্নায়ুরোগ: পারকিনসনস ডিজিজ, এএলএস বা সেরিব্রাল পালসির মতো রোগে মুখের পেশি দুর্বল হয়ে যায়। এতে লালা ধরে রাখতে সমস্যা হয়।

স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ: মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হলে বা রক্তক্ষরণ হলে মুখের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে লালা ঝরতে পারে।

স্লিপ অ্যাপনিয়া: ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকা রোগীরা সাধারণত মুখ খুলে শ্বাস নেন। এতে লালা নিঃসরণ বেড়ে যায়।

মুখ বা গলার সংক্রমণ: টনসিলাইটিস, ফ্যারিঞ্জাইটিস বা ওরাল থ্রাশে লালা বেশি তৈরি হয়।

অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা GERD: পাকস্থলীর অ্যাসিড উপরের দিকে উঠে এলে লালা উৎপাদন বেড়ে যায়।

কোন লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

১. নিয়মিত বা অস্বাভাবিকভাবে বেশি লালা পড়া
২. কথা বলতে বা খাবার গিলতে অসুবিধা
৩. মুখ বেঁকে যাওয়া, হাত-পা অসাড় লাগা
৪. ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
৫. অতিরিক্ত দিনের ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব
৬. লালার সঙ্গে দুর্গন্ধ, ব্যথা বা রক্ত দেখা

এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত নিউরোলজিস্ট বা ইএনটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসকদের পরামর্শ

চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের সময় লালা ঝরার ঘটনা সব সময় ক্ষতিকর নয়। তবে এটি যদি নিয়মিত হয় এবং সঙ্গে অন্য শারীরিক সমস্যা যুক্ত থাকে, তাহলে অবহেলা করলে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪