বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেছেন, গত ১৬/১৭ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করেছিল। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জনগণের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকারের ওপর আঘাত করা। এর ফলস্বরূপ, ৫ আগস্ট দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে, সরকারের মন্ত্রী-এমপি-রা দেশ ত্যাগে বাধ্য হন।
রোববার (২৯ জুন) বিকেল ৩টায় সিলেটের বিশ্বনাথ পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে’ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লুনা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সকল সম্প্রদায়ের উন্নয়ন করেনি, অথচ তারা এই জনগণকেই নিজেদের রিজার্ভ ভোটার হিসেবে দাবি করত। সংখ্যালঘু শব্দের কোনো প্রয়োজন নেই, আমরা সবাই ভাই-বোন, সবাই এই দেশের নাগরিক।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করব। বিএনপি কারও প্রতি প্রতিশোধের রাজনীতি করে না, আমাদের রাজনীতি উন্নয়ন ও অগ্রগতির রাজনীতি।”
তিনি বলেন, “বিএনপি মিথ্যাচারের রাজনীতি করে না এবং বিএনপি কখনোই নিরীহ ব্যক্তিকে হয়রানি বা অপদস্থ করার প্রচেষ্টা করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।”
সভায় বক্তারা পৌর শহরের দুর্গাপুর ও রথবাড়ী স্থানগুলোতে কেন্দ্রীয় মন্দির ও শশ্মানঘাট নির্মাণ, উপজেলা বিভিন্ন মন্দিরের উন্নয়ন, আখড়া সংস্কার এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সুবিধা বাড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নবেন্দ্র জ্যোতি দে’র সভাপতিত্বে এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোবিন্দ মালাকার ও উপজেলা বিএনপির আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট ঝলক আচার্য্যের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া, সিলেট মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দে, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মানিক লাল দে, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য নিশি কান্ত পাল, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সহ সভাপতি রুপক কুমার দেব, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুনীল কান্ত দে, গোবিন্দগঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শুধাংশু শেখর দত্ত, বাংলাদেশ সহকারী শিক্ষক সমিতির সিলেট জেলা শাখার সহ সভাপতি বাবুল কান্তি দাশ মেঘল।
সভার মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলার দেওকলস ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শশাংঙ্ক বৈদ্য, বিশ্বরূপ মডেল মন্দিরের পরিচালক রমা কান্ত দে, শ্রীশ্রী শনি মন্দির সার্বজনীন দুর্গা পূজা কমিটির সভাপতি বিজয় চন্দ্র দে, শ্রীশ্রী রাধারমন জিউর আখড়া দত্তার সাধারণ সম্পাদক নিশি কান্ত পাল, বিশ্বরূপ মডেল মন্দিরের সভাপতি অরুণ চন্দ্র নাথ, উপজেলার মৌজপুর গ্রামের ননী দাশ, দিঘলী গ্রামের সুনীল পাল, বাউসী গ্রামের বাবু লাল বৈদ্য। সভার শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান এবং গীতা থেকে পাঠ করেন উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবব্রত চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন:: মুরাদনগরের ধর্ষক ফজর আলীর ফাঁসির দাবিতে বিশ্বনাথে মানববন্ধন