সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে হেনস্তা করার মামলায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী ও উপজেলা যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে দুই মাসের কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে একই সময় জামিন পাওয়ায় কারাগারে যেতে হয়নি কাউকে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. রুবেল মিয়া আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর বাদী ও আসামি পক্ষ পৃথক সংবাদ সম্মেলনে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১ এপ্রিল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও অলংকারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিলু মিয়াকে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন, ২ এপ্রিল লিলু মিয়া বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সুহেল আহমদ চৌধুরী এবং যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৩/২০২২)। দীর্ঘ তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার (১৬ জুন) সকালে সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় আদালতের বিচারক দুই আসামিকেই দুই মাসের কারাদণ্ড এবং ২০০ টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ ও অ্যাডভোকেট দেওয়ান মিনহাজ গাজী।.
রায়ের পর আদালত চত্বরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাদী মো. লিলু মিয়া বলেন, “দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর আমরা বিচার পেয়েছি। এটা সত্যের বিজয়। বিশ্বনাথে ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা ম্যাডামের নেতৃত্বে বিএনপি আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করেছে, তাদের দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
এরপর তিনি পৌর শহরের দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে গেলে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানান এবং একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান।
অন্যদিকে, আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে নিজের কারিকোনা গ্রামের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মো. সুহেল আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “এই মামলাটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একসময় যারা ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বে বিএনপির রাজনীতি করতেন, আজ তারা দল থেকে বিতাড়িত, আর দখলে নিয়েছে কিছু টাউট-বাটপার। তারা দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।”
তিনি জানান, “একই বিষয়ে বাদী তিনটি মামলা করেছিলেন, যার মধ্যে দুটি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন, অপর একটি থেকে আমরা অব্যাহতি পেয়েছি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করব।”
সুহেল চৌধুরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “বিশ্বনাথের প্রকৃত বিএনপি নেতাদের পুনরুদ্ধার ও দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন:: সুহেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের মামলা





