অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীতে অবস্থিত কুখ্যাত নির্যাতনকেন্দ্র ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন। সেখানে নানা ধরনের নির্যাতনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। পাশাপাশি দেয়ালে অঙ্কিত রয়েছে বন্দিদের লেখা বিভিন্ন বার্তা।
একটি সেলের দেয়ালে আরবি ভাষায় লেখা রয়েছে— “লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোয়ালিমিন”। অন্য এক সেলের দেয়ালে রোমান হরফে লেখা রয়েছে ‘১৬৩, ১৫০, ১১৩’।
আরেকটি সেলের দেয়ালে রোমান হরফে লেখা ‘Z 174’, অন্য একটি নির্যাতনকক্ষে কালো দেয়ালের গায়ে অস্পষ্ট কিছু লেখা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রোমান হরফে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল “I love my family” এবং ‘১২৩০ দিন’। বাংলায় লেখা দুটি নামও দেখা গেছে— মাসুদ ও ইব্রাহিম।
প্রধান উপদেষ্টা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র্যাব-২-এর সিপিসি-৩-এর অভ্যন্তরীণ নির্যাতনকক্ষগুলোও ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং ‘আয়নাঘর’-এ নির্যাতনের শিকার হওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগীও উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনারা নিজের চোখে দেখেছেন, আমার নতুন করে কিছু বলার নেই। এটি ছিল ভয়াবহ এক দৃশ্য— মানবতার প্রতি চরম নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতার প্রতিচ্ছবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসংখ্য মানুষকে বিনা অপরাধে ধরে এনে এখানে রাখা হতো, সন্ত্রাসী বা জঙ্গি আখ্যা দিয়ে তাদের বন্দি করে নির্যাতন চালানো হতো।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, ‘এ ধরনের নির্যাতনকেন্দ্র শুধু এখানে নয়, বরং বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সংখ্যা সীমিত, কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, সারাদেশে এর বিস্তৃতি রয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।’
আরোও পড়ুন:: আয়নাঘর দেখার পর যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা।
তথ্য সুত্র :: দৈনিক আমাদের সময়।