বিশ্বনাথের সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হতে পারে রামপাশার ‘হাছন রাজার বাড়ি’

Ayas-ali-Advertise
বিশ্বনাথের সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হতে পারে রামপাশার 'হাছন রাজার বাড়ি'
রামপাশার 'হাছন রাজার বাড়ি'।
বিশ্বনাথের সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হতে পারে রামপাশার 'হাছন রাজার বাড়ি'
রামপাশার 'হাছন রাজার বাড়ি'।
Facebook
Twitter
WhatsApp

‘একদিন তোর হইবোরে মরণ, রে হাছন রাজা, একদিন তোর হইবোরে মরণ’, ‘মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়ারে, কান্দে হাছন রাজার মন মুনিয়ায়রে’, ‘লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা নায় আমার, কি ঘর বানাইমু আমি শূন্যেরও মাঝার’, ‘সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা বানাইলো, আরে না জানি কি মন্ত্র করি জাদু করিলো’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নামরে, না কইলাম তার কাম, বৃথা কাজে হাছন রাজায় দিন গুয়াইলামরে, আমি না লইলাম আল্লাজির নামরে’-এমন অসংখ্য কালজয়ী মরমী গানের অমর স্রষ্টা দেওয়ান হাছন রাজার সিলেটের বিশ্বনাথের জমিদার বাড়ি তার ‘ঘরবাড়ি ভালা নায়’ গানের মতই সত্যিই ভালা নেই। উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে হাছন রাজার জমিদার বাড়িটি চরম অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংসের পথে।

বাংলার লোকসাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা মরমী কবি হাছন রাজার রামপাশার জমিদার বাড়িতে রয়েছে তার পরিবারের বিপুল ভূসম্পত্তি। যার মধ্যে আছ, জমিদার আমলের একটি বিশাল দীঘি, একটি দ্বিতল কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ঘর, একটি ছাদবিহীন পাকা ঘর ও লতাগুল্মে ঘেরা একটি ধ্বংসপ্রায় দেয়াল। দুটি ঘরই দরজা-জানালাবিহীন পরিত্যক্ত। বাড়ির সামনে রয়েছে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা। তার সামনেই আছে হাছন রাজার পারিবারিক কবরস্থান।

সারা বছরজুড়েই হাছন রাজার রামপাশার জমিদার বাড়ি দেখতে আসেন বহু হাছন অনুরাগী, আউল-বাউল, মরমী কবি-গবেষক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন। বাড়িটি দর্শনে এসে সেটির করুণ দশা দেখে তাদেরকে হতাশই হয়েই ফিরতে হয়।

স্থানীয়রা জানান, হাছন রাজার শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু সংস্কার বা সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ কখনোই নেয়া হয়নি। অথচ, পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে জমিদার বাড়িটি হতে পারে বিশ্বনাথের একমাত্র সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট। আমরা আশা করি, মরমী কবি হাছন রাজার বাড়িটি সরকারি-বেসরকারি উভয় উদ্যোগে সংরক্ষণের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

২০১৮ সালে হাছন রাজা পরিবারের সদস্য, দেওয়ান তালেবুর রাজা চৌধুরীর ছেলে ও ‘হাছন রাজা সমগ্র’ গ্রন্থের সম্পাদক দেওয়ান তাছাওয়ার রাজা চৌধুরী সাংবাদিকদেরকে জানিয়ছিলেন, শিগগিরই রামপাশার জমিদার বাড়িতে সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রেমিদের জন্য একটি বিশাল কমপ্লেক্স করা হবে। যাতে থাকবে লোকসাহিত্য ইন্সটিটিউট, পাঠাগার, জাদুঘর, সেমিনার হল ও আর্ট গ্যালারী ইত্যাদি। তবে, এত বছর পরেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।

বিশ্বনাথ উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনদা রায় বলেন, ‘সিলেটের জেলা প্রশাসক মহোদয় বিশ্বনাথ উপজেলার দর্শনীয় স্থানের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাওয়ায় আমি এই উপজেলার একমাত্র সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হিসেবে হাছন রাজার বাড়ির নাম প্রস্তাব আকারে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, বাড়িটি নিয়ে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে জটিলতা ও তাদের অনাগ্রহ থাকায় সরকারিভাবে সংস্কার সংরক্ষণ করে পর্যটন স্পটে রূপান্তরিত করা যাচ্ছে না।’

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪