ইউরোপের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা প্রচণ্ড গরম জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি এবং জার্মানিতে তাপমাত্রা জুন মাসের অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা ইউরোপের এই তাপদাহকে পরিবেশগত ধ্বংসের ফলে নতুন জলবায়ু বাস্তবতা হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় আন্দালুসিয়া, কর্ডোবা ও সেভিয়ায় গত ৩০ জুন তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ প্রচণ্ড তাপের কারণে সৃষ্ট গরমজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সারাদেশে সতর্কতা জারি করেছে। অনেক শহরে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সরকারি দফতরের কাজের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের দুপুরের পর বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পর্তুগালেও তাপদাহের কারণে বনাঞ্চলে দাবানলের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। লিসবনসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলেছে। ইতালির আবহাওয়া অধিদফতর রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং গরমজনিত কারণে হাসপাতালের ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।
জার্মানিতে জুন মাসের তাপমাত্রা নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। দেশটির বিভিন্ন শহরে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই এই অস্বাভাবিক গরমের কারণ। প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ায় বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্পেনে সফরকালে ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের এক ভয়াবহ চিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, “এটা এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ইউরোপের তাপপ্রবাহ আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। তারা সবাইকে ঘরে থাকার, পর্যাপ্ত পানি পান করার এবং সরাসরি রোদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সময়সীমা কমানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:: গুজরাটে বিধ্বস্ত বিমানের কোন আরোহী বেঁচে নেই