বিশ্বের মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সিলেটের বিশ্বনাথে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সোমবার (ঈদের দিন) চৈত্র মাসের ৭ তারিখে সকাল থেকে মেঘলা ও নাতিশীতুষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করায় মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে হয়নি কোনো অসুবিধা। বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নতির জন্য করা হয় বিশেষ মোনাজাত। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্যও মহান সৃষ্টিকর্তার কামনা করা হয় সাহায্য।
বিশ্বনাথ প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার অধিকাংশ মানুষের পরিবার-পরিজন যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন। ফলে দেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা ঈদ উৎসব ধুমধাম করে উদযাপন করে থাকেন। প্রবাসীরা শুধু নিজেদের পরিবারের জন্যই নয়, গরিব আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের ঈদ আনন্দে শামিল করতে আর্থিক সহায়তা করেন। এ কারণে ঈদ উপলক্ষে বিশ্বনাথের বিভিন্ন গ্রামে বিরাজ করে চোখে পড়ার মতো উৎসবের আমেজ।
ঈদুল ফিতরকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও বিপণিবিতানগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়। বিভিন্ন গ্রামে তরুণ ও যুবকদের উদ্যোগে মসজিদ ও ঈদগাহ পরিষ্কারের পাশাপাশি ‘ঈদ মোবারক’ লেখা গেট ও তোরণ নির্মাণ এবং ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়।
বিশ্বনাথের কারিকোনা গ্রামে ঈদের দিন বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয় এক ব্যতিক্রমী আয়োজন। ঐতিহ্য অনুযায়ী, ধনী-গরিব নির্বিশেষে প্রতিটি ঘর থেকে রান্না করা মাংস ও সাদা ভাত মসজিদে পাঠানো হয়। এরপর সবাই একসঙ্গে বসে মধ্যাহ্নভোজ করেন। জানা গেছে, প্রায় ১২০ বছর ধরে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন কারিকোনা গ্রামের মানুষ।

এদিকে, ঈদ উপলক্ষে সিলেট-২ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের বিভিন্ন কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনা বিশ্বনাথের রামধানা গ্রামে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান অসুস্থ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেন এবং বিগত আন্দোলনে নিহত জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানীর কবর জিয়ারত করেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থী মুহাম্মদ মুনতাসির আলী নিজ বাড়িতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।