বাংলাদেশের একটি বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের। এই তদন্তে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী এবং শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম। এ ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ন্যায়বিচার ও নৈতিকতা বিভাগ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগে টিউলিপকে গত বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ন্যায়বিচার ও নৈতিকতা বিভাগের প্রতিনিধি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি বর্তমানে ইকোনোমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি এবং সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বের মধ্যে যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অন্যতম। তবে অভিযোগ উঠেছে, তিনি তার খালা ও বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে রাশিয়ার সাথে দুর্নীতিপূর্ণ চুক্তি করতে সহায়তা করেছেন।
জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে, যার সঙ্গে শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্য ও তার মন্ত্রিসভার ঘনিষ্ঠদের সংশ্লিষ্টতা উঠে এসেছে। টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে তদন্তের জিজ্ঞাসাবাদ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলেও এটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় রবিবার।
টিউলিপ সিদ্দিকের নাম অতীতেও একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সর্বশেষ, গত ১৯ ডিসেম্বর তিনি আরেকটি নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হন। তবে এটি প্রথমবার নয়; এর আগেও চারবারের নির্বাচিত এমপি এবং বর্তমান মন্ত্রী হিসেবে তার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে পিইটি (ন্যায়বিচার ও নৈতিকতা বিভাগ) টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতিতে তার সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চায়। যদিও টিউলিপ অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য প্রদান করেছেন, তবে এ নিয়ে বিতর্ক থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
এ ঘটনা ব্রিটিশ প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ এবং টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কৌতূহল আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই বিতর্ক তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
আরোও পড়ুন: ব্রিটেনে জনপ্রিয় নাম হিসেবে শীর্ষে উঠে এসেছে ‘মুহাম্মদ