সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজের আটদিন পর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু মুনতাহা শামীমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের হাতে আটক হয়েছে প্রতিবেশী এক নারী, যিনি মরদেহটি সরানোর চেষ্টা করছিলেন বলে জানা গেছে। পুলিশের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে মুনতাহার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষিকা মারজিয়া তাকে অপহরণ করে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর সকালে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বীরদল গ্রামের বাসিন্দা শামীম আহমদের মেয়ে মুনতাহা নিখোঁজ হয়। দিনভর অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
এক সপ্তাহ পর, শনিবার (৯ নভেম্বর) ভোররাতে প্রতিবেশী আলিফজান বিবি মরদেহটি ডোবা থেকে সরিয়ে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করে। এতে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত পরিবারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সম্পর্কিত খবর: সিলেট মহানগর জামায়াতের ২০২৫-২০২৬ শেসনের কমিটি গঠন
মুনতাহার চাচা কয়সর আহমেদ অভিযোগ করেন, পূর্ব শত্রুতার কারণে সাবেক শিক্ষিকা মারজিয়া মুনতাহাকে অপহরণ করে হত্যা করেছেন। হত্যার পর মরদেহ বাড়ির পাশের ডোবার কাদার নিচে পুঁতে রাখা হয়। শনিবার রাত ৩টার দিকে মারজিয়ার মা আলিফজান বিবি লাশটি সরিয়ে নিতে গেলে জনতা তাকে ধরে ফেলে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে মারজিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ডোবায় ফেলে রাখা হয়। প্রাইভেট শিক্ষিকা মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মারজিয়া এবং তার মা আলিফজান বিবিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাবাসী এবং মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, তারা এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন। মুনতাহার ছবি ও ঘটনার বিবরণ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে সবাই দ্রুত ও কঠোর বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছেন।