একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহম্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গ্রীণরোডে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন পরিবারের সদস্য শারমিনা আহমেদ।
অভিনেতার সহকারী রবিন মন্ডল গণমাধ্যমকে জানান, ‘গত ৬ অক্টোবর মাসুদ আলী খান ৯৬ বছরে পা রাখেন। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এই প্রবীণ শিল্পী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’
দাফনের স্থান ও সময় নিয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন রবিন মন্ডল। তিনি বলেন অভিনেতার যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী একমাত্র ছেলের সিদ্ধান্তের ওপরই এটি নির্ভর করছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে দাফন করা হতে পারে।
মঞ্চে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয়জীবন শুরু হয় মাসুদ আলী খানের। ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র চালু হলে তিনি ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন এবং পরবর্তীতে চলচ্চিত্রেও দাপটের সাথে কাজ করেন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রায় ৫০০ নাটকে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি বাংলা নাটকের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
মাসুদ আলী খানের জন্ম ১৯২৯ সালের ৬ অক্টোবর মানিকগঞ্জের পারিল নওধা গ্রামে। বাবা আরশাদ আলী খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী, আর মা সিতারা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।
১৯৫২ সালে উচ্চমাধ্যমিক এবং ১৯৫৪ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন মাসুদ আলী। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র চালুর পর নূরুল মোমেনের নাটক ‘ভাই ভাই সবাই’ দিয়ে ছোট পর্দায় তাঁর অভিষেক ঘটে। চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম অভিনয় সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’তে।
১৯৫৫ সালে খান তাহমিনা খানকে বিয়ে করেন মাসুদ আলী। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কর্মজীবনে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করেছেন এবং ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সচিব হিসেবে অবসর নেন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে একাধিক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন তিনি।