মাদ্রাসা রক্ষায় অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

Ayas-ali-Advertise
Facebook
Twitter
WhatsApp

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা রক্ষায় অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে তাকে অপসারণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। তাদের দাবি, ২০১৪ সালে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আবু তাহির মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, নানারূপ জাল জালিয়াতি, ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরী করে মাদরাসার অর্থ আত্মসাতের মহোৎসবসহ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারকে মামলা হামলা, শিক্ষকদের হয়রানি ও চাঁদাবাজি করে মাদ্রাসাকে ক্ষতিগ্রস্থ করছেন।

শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের সদস্য ফারুক আহমদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি অধ্যক্ষ আবু তাহির কর্তৃক গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বিশ্বনাথে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে করা মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা নিয়ে মরহুম এটিএম ওলিউর রহমান ১৯৭০ সালে এলাহাবাদ ইসলামিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তার সার্বিক তত্বাবধানে অত্যন্ত সুনামের সাথে মাদরাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। পর্যায়ক্রমে ২০০৪ সালে মাদৃরাসা আলিম পর্যায়ে উন্নীত হয়। ২০১৪ সালে মাদরাসার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে এর আগে তারই নিকটাত্মীয় তেলিকোনা গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে অধ্যক্ষ নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব নেবার পর থেকেই আবু তাহির মাদরাসাটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানের সাথে জামায়াত-শিবিরের কোন সম্পৃক্ততা না থাকলেও অধ্যক্ষ নিজেকে বাঁচাতে কৌশলে তার কিছু আত্মীয়কে দিয়ে ‘জামায়াত-শিবিরের ধ্বংসের হাত থেকে মাদরাসা রক্ষার আবেদন’ শিরোনামে শিক্ষামন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করান। তবে তাদের এ অভিযোগের তদন্তে এমন কোন প্রমাণই পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর তার বিরুদ্ধে আনীত স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অর্থআত্মসাতের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী বরাবর লিখিত সুপারিশও করেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘তিনি এমপিওভুক্ত মাদরাসার অধ্যক্ষ হয়েও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কাজী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যা বিধি সম্মত নয় বলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তদন্তে প্রমাণিত। এতে মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি মাদরাসার শিক্ষক ও মসাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারকে হয়রানী করার জন্য উক্ত মাদরাসার সাথে জামায়াত-শিবিরের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ করলে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি। তার অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় মাদরাসা শিক্ষক, প্রতিষ্ঠাতা পরিবার ও এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে করে অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে অপসারণ না করলে যে কোন সময় সংঘাত সৃষ্টি হয়ে এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অনতিবিলম্বে আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণপূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি অনুরোধ করেছেন এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বনাথ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওয়াহিদ আলী, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুন নুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মখদ্দুছ আলী, আফতাব আলী, আলকাছ আলী, এলাকার মুরব্বি হাজী বাদশাহ মিয়া, পীর শামছুল ইসলাম তোতা মিয়া, জবেদ আলী, আলহাজ্ব আবুল লেইছ, আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন, শাহ তোফাজ্জুল হোসেন ভান্ডারী, নুর উদ্দিন, তালিব উদ্দিন, আকলিছ হোসেন, আছকির আলী, আমির উদ্দিন, আব্দুস সালাম, মনু মিয়া, মুজাহিদ আলী, মঈন উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪