স্কুল ছাত্রীর পর্নো ভিডিও প্রচারের ঘটনার মূল হোতা মইনুল ও তার সহযোগী আটক
বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুন - ২৯ - ২০১৪ | ৪: ৪৮ অপরাহ্ণ
জানা গেছে, মইনুল ইসলামের সাথে একই গ্রামের স্কুল পড়–য়া ছাত্রী সেলিনা বেগম (ছদ্ধনাম) এর দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সুবাদে প্রায় বছর খানেক পূর্বে মইনুল তার প্রেমিকা সেলিনা বেগম কে কামাল বাজারস্থ নওরিন ফটো ষ্টুডিওতে বিভিন্ন সময়ে নিয়ে অশ্লিল ভিডিও ও ছবি ধারন করে। সম্প্রতি ধারণকৃত ঐ ভিডিও ও ছবি ফেইসবুক ও মোবাইলের মাধ্যমে উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে রামপুর গ্রামবাসী বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসেন। সর্বশেষ গত ২ জুন গ্রামবাসীর বৈঠকে অভিযুক্ত মইনুল ও তার সহযোগী একই গ্রামের দিলোয়ার কে হাজির করা হয়। ঐ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে অভিযুক্ত মইনুল ও দিলোয়ারকে বেত্রাঘাত করা হয় এবং মইনুলকে তার গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ করানো হয়। বিষয়টি নিয়ে পরদিন ৩ জুন জাতীয় ও সিলেটের স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে শুরু হয় তোলপাড়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সিলেটের পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এলাকায় তদন্ত করেন। তদন্তে স্কুলছাত্রীর পর্নো ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। জবানবন্দি নেয়া হয় ভিকটিমের পিতার। বক্তব্য রেকর্ড করা হয় এলাকায় মানুষের। পুলিশ পর্নো ফুটেজসহ ঘটনার সামগ্রিক তথ্য সংগ্রহ করে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। অবশেষে গত শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপুর বাজার থেকে মইনুলের সহযোগী হেলাল আহমদকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। এরপর হেলালের দেয়া তথ্য মতে শনিবার ভোরে ছাতক উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল হোতা মইনুল ইসলাম কে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এদিকে, শুক্রবার বিকালে কামালবাজারস্থ নওরীন ফটো স্টুডিও দোকানের মালিক বিশ্বনাথ উপজেলার রাউতর গাঁও গ্রামের আশরাফ আলী স্টুডিও’র মালামাল সরিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে পুলিশ তাকে আটক করে এবং ক্যামেরা, কম্পিউটারসহ মালামাল জব্দ করে। পরবর্তীতে আশরাফ আলীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত এ পর্নোগ্রাফির ঘটনার পর এলাকার স্কুলছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবকরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে মইনুল ইসলাম ও তার সহযোগী হেলাল আহমদ এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এসময় এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে আলোচিত নওরীন ফটো স্টুডিও (যেখানে পর্নোগ্রাফি ক্যামেরাবন্ধি করা হত) বন্ধ করে দেন।
এব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তা এসি সাজ্জাদ সাংবাদিকদের জানান, সিলেটের পুলিশ কমিশনার বিষয়টিকে জনগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার নির্দেশেই পুরো ঘটনার তদন্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আসামিদের দক্ষিণ সুরমা থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মুরছালিন জানান, এ ঘটনায় আরও তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন চাকমা-ও রয়েছে। মূল ঘটনাকারী মইনুল। তবে হেলালের সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোন প্রমাণ না পাওয়ায় দোকানের মালিক আশরাফ আলীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।