বিয়ানীবাজারের চাঞ্চল্যকর শিক্ষক বিনয়ন্দ্র ভূষণ চক্রবর্তী হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, হত্যাকাণ্ডটি ছিল ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ও সুপরিকল্পিত। দীর্ঘ সাত বছর ধরে মামলার ১৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, আসামিদের স্বীকারোক্তি, নিহতের স্ত্রী ও মেয়ের বর্ণনা এবং দুই পরিবারের বিরোধের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে আদালত এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জয় লাল নাথ, কানাডা প্রবাসী মূল পরিকল্পনাকারী ওয়াসিম রাজা এবং দুলাল আহমদ বাবর। রায় ঘোষণার সময় বাবর ও জয় লাল নাথ আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মামলার সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ এলাকায় আসামিরা শিক্ষক বিনয়ন্দ্র ভূষণ চক্রবর্তীকে ঘর থেকে ডেকে বের করে অগ্নিদগ্ধ করেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে সিলেট এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ছয় দিন পর ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মামলার সুত্রে আরোও জানা যায়, কানাডা প্রবাসী ওয়াসিম রাজা নিহতের মেয়ে ডা. শর্মিলা চক্রবর্তীর সঙ্গে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তবে ধর্মীয় কারণে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি বিদেশ থেকে সহযোগীদের মাধ্যমে শিক্ষক বিনয়ন্দ্র ভূষণ চক্রবর্তীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
নিহতের মেয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শর্মিলা চক্রবর্তী বলেন, “সাত বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। সরকার দেশের বাইরে থাকা আসামিকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করবে বলে আশা করি।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, “এই রায় আসামিদের অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি। ভিকটিম পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে।”
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “আমরা রায়ে সন্তুষ্ট নই। প্রসিকিউশন মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা হাইকোর্টে আপিল করব।”
আরোও পড়ুন:; ওসমানীনগরে জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণকারের মরদেহ উদ্ধার।







