সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির প্রাক্তন সভাপতি ফখরুল ইসলাম মতছিনের বিরুদ্ধে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের মাধ্যমে তিনি দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সিলেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাইজগাঁও গ্রামের এমএন ইসলাম খান এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম মতছিন দায়রা মামলা নং ৫৯৪/২০১৭, ৫৪৭/২০১৭ ও ৪৭৭/২০১৭–এর রায়ে আদালত কর্তৃক ২৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন। আইন অনুযায়ী দণ্ডিত ব্যক্তি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে না পারলেও, তিনি পলাতক অবস্থায় থেকে জোরপূর্বকভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ৩৫টি সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে তিনি তৃতীয় মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়, ফখরুল ইসলাম মতছিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ লাখ টাকার ১৩টি গাছ কেটে ফেলেন। এর মধ্যে মাত্র দুটি গাছ প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়, বাকি ১১টি গাছ দিয়ে তিনি নিজের ঘরের আসবাবপত্র তৈরি করেন। এছাড়া গাছ চিড়ানোর কথা বলে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাওয়া ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া ২ লাখ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রকল্প ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেন তিনি। পরে ওই অর্থ খরচ দেখিয়ে ভুয়া ভাউচার দাখিল করে অতিরিক্ত ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার ব্যয় দেখান। পাশাপাশি ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের ২২ হাজার ৫০০ টাকা এবং কলেজ শাখা থেকে ৫ লাখ টাকাসহ মোট ১২ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগও করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, এসব অভিযোগের সত্যতা শিক্ষা বোর্ড ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। অডিট প্রতিবেদনে আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত এবং ফখরুল ইসলাম মতছিনকে গভর্নিং বডির সভাপতি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধার ও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরও লিখিত দাবি পেশ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেন দেওকলস ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের আব্দুল গণি, ফারুক মিয়া, আব্দুল সালাম, হাসান আহমেদ, সালাউদ্দিন, আব্দুর রহিম, সোহান আহমদ, মাইজগাঁও গ্রামের সৈয়দ আলী, প্রজাখাবাদ গ্রামের আজাদুর রহমান খান, জগৎপুর গ্রামের মবশির আলী ও দলিপাঠি গ্রামের সাদ্দাম হোসেনসহ আরও অনেকে।
আরোও পড়ুন:: বিশ্বনাথে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে তিন সংগঠনের যৌথ সভা।