আত্মসমর্পণ না করলে টিউলিপ হবেন আন্তর্জাতিক পলাতক

Ayas-ali-Advertise
আত্মসমর্পণ না করলে টিউলিপ হবেন আন্তর্জাতিক পলাতক
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।
আত্মসমর্পণ না করলে টিউলিপ হবেন আন্তর্জাতিক পলাতক
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।
Facebook
Twitter
WhatsApp

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক অনিয়মের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানায় সংস্থাটি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশের একটি আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, দুদকের দায়ের করা মামলাটি এদিন আদালতে উত্থাপিত হয়। মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি আদেশ জারির ফলে তাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা ওই মামলায় এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ধারণা করা হচ্ছে, টিউলিপ সিদ্দিকও ওই একই মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি হিসেবে তিনি নগরমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে আলোচিত দুর্নীতির মামলাগুলোর সঙ্গে তার নাম উঠে আসায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি এবং শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর হলে এবং তিনি আত্মসমর্পণ না করলে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় টিউলিপকে পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ফলে বাংলাদেশ সরকার তার প্রত্যর্পণ চেয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে পারবে।

গত আগস্টে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জমি বরাদ্দ ও আর্থিক দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, পূর্বাচল প্রকল্পের অধীনে প্রায় এক একর জমি অবৈধভাবে শেখ হাসিনা, তার সন্তান এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঢাকায় অন্য একটি সম্পত্তির মালিক হয়েও পূর্বাচলে জমি বরাদ্দ নিয়েছেন, যা সরকারি নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রক্রিয়াটি পরিচালনার সময় তিনি ও তার পরিবার নিয়ম ভেঙে পাবলিক লটারি ও নির্ধারিত মানদণ্ড এড়িয়ে জমি পান, যা সাধারণত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত ছিল।

এই জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ছয়জন হাসিনা পরিবারের সদস্য। এ ছাড়া টিউলিপের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

একই সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাতের অভিযোগেও টিউলিপের নাম সামনে এসেছে। এর পাশাপাশি তিনি লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের দেওয়া একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন বলেও তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, যদিও প্রথমে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪