সিলেটের বিশ্বনাথে পৌর শহরের পুরাণ বাজারে অবস্থিত নিজ মার্কেটের দোকান ভাড়া চাইতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন এমরান আহমদ লিটন (২০) নামের এক দোকান মালিক। তিনি পৌরসভার পূর্ব মন্ডলকাপন গ্রামের মৃত শাহ আরমান আলীর পুত্র। গুরুতর আহত অবস্থায় লিটন বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় দোকানের ভাড়াটিয়ার ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে এবং শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় লিটনের চাচাতো ভাই জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ১১, তাং ২৮.১১.২০২৪)।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- পৌরসভার সুড়িরখাল গ্রামের হাজী হারিছ আলীর পুত্র আলাউদ্দিন, নিজামউদ্দিন, একই গ্রামের মৃত হাজী ফুলকাছ আলীর পুত্র রহিমউদ্দিন, নূরউদ্দিন, হেলালউদ্দিন, হেলালউদ্দিনের পুত্র আলী হোসেন, আলাউদ্দিনের পুত্র আবুল কাশেম, রহিমউদ্দিনের পুত্র আলমাছ আলী। এছাড়া আরো ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা রয়েছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে দোকানের ভাড়া তুলতে ভাড়াটিয়া রহিম বাদার্সের পরিচালক রহিমউদ্দিনের কাছে লিটন। এসময় রহিম উদ্দিন দোকান ভাড়া না দিয়ে লিটনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে রহিমউদ্দিন এবং তার সঙ্গীরা লিটনকে গণধোলাই দেন এবং বিদেশি চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্বক জখম করেন। পরে স্থানীয়রা লিটনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রক্তাক্ত অবস্থায় লিটন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন লিটনের চাচাতো ভাই এবং মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন।
জয়নাল আবেদীন বলেন, “দোকানের ভাড়াটিয়ার কাছে ভাড়া চাওয়ায় আমার চাচাতো ভাই লিটনকে তারা অমানবিক নির্যাতন করেছে এবং হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি।”
সর্ম্পকিত খবর:: বিশ্বনাথে সিলিং ফ্যান থেকে কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মামলার অভিযুক্ত রহিম উদ্দিন জানান, “আরমান আলীর ছেলে লিটন ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে আমার দোকানে এসে ২০০ টাকা চায়। আমি তাকে বলি তার সৎ মা তাকে টাকা না দিতে নিষেধ করেছেন। পরে তর্কাতর্কির পর আমি তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে দেই এবং বিষয়টি লিটনের চাচাতো ভাই জয়নালকে জানাই। এরপর আমি বাড়ি চলে যাই। পরে রাত ৮টার দিকে লিটন আবার দোকানে এসে টাকা চায়। তখন আমার ভাই গিয়াস ক্যাশে ছিল। গিয়াস টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লিটন তাকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। এর ঘন্টা খানিক পরে আবার লিটন দোকানের সামনে এসে ডাকাডাকি করে এসময় তার উপর কে হামলা করেছে তা আমরা জানিনা। আমার ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।”
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) রুবেল মিয়া জানান, হামলার ঘটনায় গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।