নিজস্ব প্রতিবেদক:: ‘লেগেছে রে, লেগেছে-রক্তে আগুন লেগেছে’ কিংবা ‘এক দফা এক দাবী-প্রধান শিক্ষক তুই কবে যাবি’। ছাত্র-ছাত্রীদের এমন এমন গরম গরম স্লোহানে সিলেটের বিশ্বনাথ ছিল উত্তাল। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর)) উপজেলার ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে বিশ্বনাথে দিনভর ছিল টানটান উত্তেজনা। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবক মহলেও বেড়ে গেছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।
সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশ ছিল উত্তাল। ৯ দফার আন্দোলন অবশেষে পরিণত হয় ১ দফার আন্দোলনে। পৃথিবীর ইতিহসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পতন হয় সরকারের। এরপর সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদত্যাগের দাবির হিড়িক পড়ে। এর প্রভাব পড়েছে প্রবাসী অধ্যূষিত বিশ্বনাথ উপজেলায়ও।
আরও পড়ুন :: কামরুল ইসলাম রেজার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষি’কী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দো’য়া মাহ’ফিল
সম্প্রতি উপজেলার প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর বিশ্বনাথ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসা ও এলাহাবাদ আলিম মাদ্রাসা প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে ছাত্র-জনতা।
রবিবার উপজেলার ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা সদরে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মুখে পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টায় বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসার সম্মুখ থেকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা নো’মান আহমদের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতা ও বেলা ১১টায় হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নেহারুন নেছার পদত্যাগের দাবিতে প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীরা বিভোক্ষ মিছিল সহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসে।
উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসায় এসে তালাবদ্ধ করে বন্ধ করে দেয় এবং তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয়। অন্যদিকে সকাল থেকে বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈলস্থ পঞ্চগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রায়হান উদ্দিনের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। গতকাল দিনভর মিছিলে মিছিলে উত্তাল ছিল বিশ্বনাথ।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, ২টি প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে দুটি স্মারকলিপি দাখিল করা হয়েছে এবং সেগুলো সংশ্লিষ্ঠদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নেহারুন নেছা বলেন, কেউ আমার বিরুদ্ধে দূর্নীতি প্রমাণ করতে পারবেনা। আমি শতভাগ স্বচ্ছ আছি। আমার বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভ করেছে তারা শিক্ষার্থী কিনা এটা সবার দেখা উচিত। যারা বিক্ষোভ করেছে তাদের অধিকাংশই বয়স্ক মহিলা ও পুরুষ। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। বিচারের ভার আমি বিশ্বনাথবাসি ও দেশবাসীর দিলাম।
বিশ্বনাথ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নোমান আহমদ বলেন, বহিরাগতদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিছিল করানো হচ্ছে। ভাইরাল অডিও তার প্রমাণ। আমি একটি স্বার্থনেষী মহলের কাছে ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমি থানায় একটি জিডি এন্টি করেছি। তার প্রতিকার না পেলে আমি আইনী সহায়তা চাইব।