আন্তর্জাতিক সংবাদ:: এ বছর ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন পথ দিয়ে ইউরোপে অবৈধ অভিবাসন বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে অবৈধ অভিবাসন রোধে সরকারের প্রচেষ্টার কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্সের মতে, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে, ভূমধ্যসাগরীয় পাঁচটি পথ দিয়ে সীমান্ত পারাপারে বাংলাদেশিদের ১০,৩৭৬টি ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে। যার সংখ্যা ২০২১ সনে ছিল ৮৫২৩।
২০১৭ হতে ২০২১ এর মধ্যে, ভূমধ্যসাগরের ৫টি রুট দিয়ে ট্রানজিট করা বাংলাদেশীদের মোট সংখ্যা ২৬,৮২০টি কেস সনাক্ত করা হয়েছে, যার মানে প্রতি বছর গড়ে ৫,৩৬৮ টি ।
ফ্রন্টেক্সের অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়া লোকের সংখ্যার তথ্য প্রদান করে, কতবার তারা সীমান্ত অতিক্রম করে। কারণ একই ব্যক্তি একাধিকবার সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে।
আগস্ট পর্যন্ত, অবৈধ সীমান্ত ক্রসিং ভূমধ্যসাগরীয় মধ্য পথ দিয়ে লিবিয়া এবং ইতালিতে পার হয়েছেন ৮৯% ।
অন্য ৪টি রুট হলো— পূর্ব ভূমধ্যসাগর ও স্থলপথ এবং পশ্চিম ভূমধ্যসাগর ও স্থলপথ।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ভূমধ্যসাগরীয় পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলেছে, ২০ হাজার ৭০০ বাংলাদেশি নাগরিক ইউরোপে গিয়েছেন, যা তিউনিসিয়ান ও মিশরীয়দের পরে ৩য় সর্বোচ্চ সংখ্যা ।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (IOM), তার নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্পের অধীনে, ২০১৪ সানের জানুয়ারি হতে এই বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউরোপে যাওয়ার পথে কমপক্ষে ১৫৫জন বাংলাদেশির অধিবাসীর মৃত্যুর নথিভুক্ত করেছে।
অক্টোবরে প্রকাশিত প্রকল্পের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে। কারণ ২০১৪ হতে ২০২১ সালের মধ্যে ইউরোপে যাওয়ার পথে মারা যাওয়া ১৭,০০ জনেরও বেশি লোক কোন দেশে নাগরিক এ তথ্য না দিয়ে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
ব্র্যাকের ইমিগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, “বাংলাদেশিদের এই অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা খুব কঠিন হবে যদি তারা ভ্রমণের বিপদ সম্পর্কে সচেতন না হন।
তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে ঢাকা, ফরিদপুর ও সিলেট সহ ৮ থেকে ১০ জেলার লোক বেশীর ভাগ এসব পথে ইউরোপ যওয়ার চেষ্টা করে।
এসব লোকদেরকে ভাল ভাবে বোঝাতে হবে, যে এ পথে যাত্রা করা বিপদজনক, মৃত্যু, গ্রেপ্তারসহ অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। এ ছাড়া এ পথ দেশের ভাবমূর্তির জন্য শুভনীয় নয়।