বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথে বাড়ির স্থাপনা, বৃক্ষ ও পুকুর ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-গোপন করে সহকারি জজ বিশ্বনাথ আদালতে রিপোর্ট প্রদান করেছেন নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনার। তিনি সিলেট জজ-কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: শুকুর আলী। তথ্য-গোপন করে আদালতে রিপোর্ট পেশ করায় ওই আইনজীবীর (কমিশনার) বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন আরশ খাঁ (৫০) নামের এক ভোক্তভূগী। তিনি বিশ্বনাথ পৌর শহরের জাহারগাঁও গ্রামের মৃত সিকন্দর খাঁ’র ছেলে। গত ২৪ ডিসেম্বর তিনি আইনজীবী শুকুর আলীকে অভিযুক্ত করে সিলেট জেলা বারের (আইনজীবী সমিতি) সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগী আরশ খাঁ উল্লেখ করেছেন, তিনি ৮৫/২০১৯ নাম্বারের স্বত্ব মোকদ্দমা মামলার বিবাদী হন। আর এই স্বত্ব মামলার বাদী হচ্ছেন আরশ খাঁ’র চাচী একই গ্রামের ছমরুন নেছা পক্ষ। মামলাটির স্বত্ব সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য অ্যাডভোকেট মো: শুকুর আলীকে কমিশনার নিয়োগ করেন আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ নভেম্বর সরেজমিন পরিদর্শন করে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন ওই কমিশনার।
এসময় গ্রামের ১০/১৫জন মুরব্বিয়ানও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কমিশনার বাদী পক্ষের কাছ থেকে ৪হাজার টাকা নিয়ে প্রতিবেদনে তাদের বাড়ির ভূমির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রেখেন। তাদের দাবি ওই বাড়িতে থাকা গাছের বয়স ৩০/৩৫ বছর হবে। কিন্তু কমিশনার তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন ওই গাছগুলোর বয়স ১০/১৫ ও ৪/৫ বছর।
বাড়িতে তার ভাই আমির খানের চার রুমের দুটি বাথরুমসহ একটি ঢালাই করা দালান বসতঘর ও আরশ খানের দুটি বাথরুমসহ দালানের তৈরী টিন শেডের চাররুমের বসত ঘর রয়েছে। কিন্তু কমিশনার তার স্কেচমেপে উল্লেখ করেছেন, সেমিপাঁকা মাত্র একটি ঘর রয়েছে। বাড়ির পূর্বে পাঁকা ঘাটলাসহ ছোট একটি পুকুর রয়েছে। কিন্তু কমিশিনার ঘাটলা বাদ দিয়ে বলেছেন এটি একটি ডোবা। এভাবে তথ্য গোপন করে তিনি বিবাদী ও বাদীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়েছেন।
আরশ খাঁ এ প্রতিবেদককে বলেন, কমিশনার তদন্তে এসে তার কাছ থেকে ৪হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরও তথ্য গোপন করে আদালতে রিপোর্ট দিয়েছেন। আরশ খা বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি ও তার ভাই তারা দুই ভাইয়ের আলাদা আলাদা বসত ঘর রয়েছে। একটি সেমি আর অপরটি পাকা ঘর। কিন্তু তা বাদ দিয়ে তিনি সেমি-পাকা একটি বাড়ি দেখিয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট শুকুর আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগকারীর কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা তিনি নেননি। আর তার দেওয়া তদন্ত রিপোর্টও সঠিক। তার দাবি, অভিযোগকারী আরশ খাঁ আদালতে নারাজি দেওয়ার পরও তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে জেলা বারের সভাপতির নিকট মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। আর ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা বারের সভাপতি তাকে শোকজও করেছেন বলে জানান তিনি।