Search
Close this search box.

বিশ্বনাথে অজ্ঞাতনামা নারীকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সেই তবারক গ্রেফতার

Ayas-ali-Advertise
Facebook
Twitter
WhatsApp

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দীর্ঘ তদন্তের পর ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল এক অজ্ঞাতনামা নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় আলোচিত-সমালোচিত মাদক সম্র্রাট তবারক আলী ওরফে ইয়াবা সুমনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। তবারক উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পাঠাকইন গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর পুত্র।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান ও পরিদর্শক (তদন্ত) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এসআই জয়ন্ত সরকার, এএসআই হোসাইন আহমদ, আবুল কাশেমসহ একদল পুলিশ মাদক সম্র্রাট তবারক আলী ওরফে ইয়াবা সুমনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত তবারকের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদক, চুরি, গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১২টি মামলা রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর বাড়ির সামন থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এঘটনায় ওই দিন রাতেই থানা পুলিশের তৎকালীন এসআই রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিশ্বনাথ থানায় মামলা নং ১১ (তাং ২২.০৪.২০১৭ইং) ও জিআর মামলা নং ৬৫/১৭ইং। মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ বা পিবিআই। অবশেষে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় রুমি আক্তার নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রুমির লাশ উদ্ধারের পর ঘাতক রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর পুত্র সফিক মিয়া’কে গ্রেফতার করা হলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দিতে রুমিকে হত্যার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, রুমিকে খুন করার ১৭ মাস পূর্বে সে (সফিক) ও তবারক আলী মিলে অজ্ঞাতনামা ওই নারীকেও একাধিকবার ধর্ষণ করার পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পলিতিন ব্যাগ বিক্রির পর তবারক আলী গাড়ির হেলপারির কাজ শুরু করে। আর গাড়ির হেলপারি থেকে তবারক গাড়ি চুরির সাথে জড়িয়ে পড়ে। চুরির মামলায় গ্রেফতারের পর থানা হাজত থেকে হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে যাওয়ারও অপরাধ রয়েছে। যদিও থানা পুলিশ তাকে পুনঃরায় গ্রেফতার করে। আর জেল থেকে মুক্তিলাভের পর ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে মাত্র ৩/৪ বছরের ব্যবধানে জিরো থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে তবারক ওরফে ইয়াবা সুমন। শুধু বিশ্বনাথেই নয়, তবারক দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা সম্র্রাট বা ইয়াবা সুমন নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে মাদক, চুরি ও ধর্ষণ করে খুন’সহ প্রায় ১২টি মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৬ মার্চ হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা এলাকায় ৬১ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্র্রেফতার হয় তবারকের দুই নারী সহযোগী নাহিদা বেগম ও শাহিনা খাতুন। তাদের স্বীকারোক্তিতে ওই দিন রাতেই নিজ বাসা থেকে তবারক আলীর স্ত্রী সাবিনা আক্তারকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ এবং ১৩ মার্চ ভোর রাতে নিজ বাড়ি থেকে আলোচিত-সমালোচিত মাদক সম্র্রাট তবারক আলীকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারী কুমিল্লার আলেকার চর এলাকা থেকে ৪০ হাজার পিচ ইয়াবাসহ তবারকের দুই নারী সহযোগী সুমী আক্তার ও লিপি বেগমকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ এবং ২৯ জুন নরসিংদী-ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভাগদী এলাকা থেকে ২৭ হাজার পিচ ইয়াবাসহ তবারকের গাড়ির চালক আজির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ। কিছু দিন পূর্বে তবারকের ম্যানেজার দুলু মিয়ার বাড়ি থেকে কয়েক হাজার পিচ ইয়াবাসহ দুলুর ভাইকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ।

অজ্ঞাতনামা নারীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তবারক আলী ওরফে ইয়াবা সুমনকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান জানান, সে একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিশ্বনাথসহ বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক, ধর্ষণ ও হত্যার একাধিক মামলা রয়েছে।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪