ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের নারী হিসেবে ফাঁসি হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের আলোচিত নয় শিশু হত্যাকারী দুই বোনের।
১৩ শিশুকে অপহরণের পর ৯ জনকে হত্যার দায়ে ২০০১ সালে প্রাপ্ত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হতে চলেছেন ওই দু’বোন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, রেণুকা কিরণ সিনধে ও সীমা মহন গবিৎ নামে এ দুই গুরুতর অপরাধী বোন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির কাছে জীবন ভিক্ষা চাইলেও তা নাকচ করে দেওয়া হয়।
গত শনিবার সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কাগজপত্রও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার জন্য নেওয়া দণ্ড কার্যকরের মধ্যবর্তী সময়ও (বাফার পিরিয়ড) শেষ হয়ে গেছে। এখন কেবলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে দণ্ড কার্যকরের পালা।
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কেবল ৫২ জনের ফাঁসি হয়েছে বলে দাবি সরকারি কারা পরিসংখ্যান বিভাগের। যদিও পিপল’স ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের হিসেব মতে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ১৪২২ এরও বেশি। তবে, সরকার বা মানবাধিকার সংগঠন-কারও হিসাবেই কোনো নারীর ফাঁসিতে ঝোলার বিষয়ে তথ্য নেই।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, রেণুকা ও তার বোন সীমা তাদের মা অঞ্জনাবৈ গবিৎ’র সহযোগিতায় ওই ১৩ শিশুকে পাচারের জন্য অপহরণ করে এবং আটক হওয়ার উপক্রম হলে বেশ ক’জনকেই মেরে ফেলে।
দুই বোন বর্তমানে পুনের যেরবাদা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বিচারকার্য চলাকালে তাদের মা অঞ্জনাবৈ মারা যান। আর অপরাধে জড়িত প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বাবাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র বিভাগের ডেস্ক অফিসার দীপক জাদিয়ে দুই বোনের ফাঁসিতে আর কোনো বাধা নেই জানিয়ে বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমরা দুই বোনকে, তাদের স্বজনকে, সংশ্লিষ্ট আদালত ও মেডিকেল বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছি। কর্তৃপক্ষের সংকেত পেলেই দণ্ড কার্যকর হবে।
২০০১ সালে এদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সময় বিচারপতি জি কে যেদকে বলেন, নয় শিশুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম। এই দুই বোন শিশুদের হত্যাকাণ্ড উপভোগ করেছেন। মৃত্যুদণ্ডের চেয়েও বড় কোনো দণ্ড থাকলে এদের সেটা পাওয়া উচিত ছিল।