সততার মূল্য দিতে হয়েছে প্রাণ দিয়ে—সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির একটি নির্মাণাধীন ভবনে দায়িত্ব পালনকালে নির্মমভাবে খুন হন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার প্রবাসী ফয়জুল হক। আজ কফিনবন্দী হয়ে তিনি ফিরে এলেন নিজের জন্মভূমিতে।
সোমবার (১৯ মে) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় ফয়জুল হকের মরদেহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্বজন, প্রবাসী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। পরে মরদেহ নেওয়া হয় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের ভুরকী (পাক্কাবাড়ি) গ্রামে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজ বাড়ির পাশে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
ফয়জুল হক ওই গ্রামের বাসিন্দা হাজী রইছ আলীর ছেলে। দুই সন্তানের জনক ফয়জুল দীর্ঘদিন ধরে আবুধাবির শামখা এলাকায় একটি বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। সততা ও বিশ্বস্ততার জন্য কোম্পানির মালামাল দেখভালের দায়িত্ব তাঁর উপরেই ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের ছুটিতেও তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই সময় তাঁর দুই সহকর্মী—ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা—কোম্পানির মালামাল চুরি করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঈদের পরদিন, ফয়জুল যখন অজু করছিলেন, তখন পেছন থেকে কাঠ জাতীয় কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে ওই দুই সহকর্মী। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
নিহতের মরদেহ স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে হিমঘরে রাখা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পরিবারের চেষ্টায় তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয়।
ফয়জুল হকের মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের কণ্ঠে এখন একটাই প্রশ্ন—‘সততা কি আজও নিরাপদ?’ তাঁরা দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:: আমিরাতে বিশ্বনাথের প্রবাসী ফয়জুল খুন- জানা গেল খুনের কারণ।