গণভবনে গান গেয়ে শেখ হাসিনার মন ভালো করতেন মমতাজ

Ayas-ali-Advertise
গণভবনে গান গেয়ে শেখ হাসিনার মন ভালো করতেন মমতাজ
গণভবনে গান গেয়ে শেখ হাসিনার মন ভালো করতেন মমতাজ।
গণভবনে গান গেয়ে শেখ হাসিনার মন ভালো করতেন মমতাজ
গণভবনে গান গেয়ে শেখ হাসিনার মন ভালো করতেন মমতাজ।
Facebook
Twitter
WhatsApp

মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম মন খারাপ থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গান শুনিয়ে মন ভালো করে দিতেন—এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।

মঙ্গলবার (১৩ মে) রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এদিকে, দুপুর ২টা ২০ মিনিটে মমতাজ বেগমকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয় তাকে। পরে বিকেল ৩টার দিকে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের সাততলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার এজলাসে তোলা হয়।

বেলা ৩টা ৭ মিনিটে শুনানি শুরু হলে আদালত কক্ষে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। কাঠগড়ায় মমতাজের হেলমেট ও মাস্ক খুলে দেওয়া হয়।

এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম সাত দিনের রিমান্ড আবেদন পেশ করেন। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে বক্তব্য দেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।

শুনানির শুরুতে তিনি বলেন, “আমরা জাতি হিসেবে আবেগপ্রবণ। কেউ ভালো খেললে, কেউ ভালো গান গাইলে তাকে পছন্দ করি। কিন্তু মমতাজ সেই জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে একজন ফ্যাসিস্ট নেতাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “যখন দেশে গুম, খুন, আয়নাঘর আর আন্দোলনে গুলি করার ভয়াবহ পরিবেশ বিরাজ করছিল, তখন মমতাজ গানের ভালোবাসা দিয়ে সেই পরিস্থিতিতে ভূমিকা রেখেছেন।”

সংসদে মমতাজের ভূমিকা নিয়ে প্রসিকিউটর বলেন, “যেখানে সংসদের প্রতি মিনিটে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়, সেখানে তিনি গান গেয়ে বলেন, ‘আমার নেত্রী শেখ হাসিনা, সারা বিশ্বে নাই তার তুলনা’। অথচ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও সংসদে খালেদা জিয়া বা জিয়াউর রহমানের প্রতি এমন কটু মন্তব্য করেননি। কিন্তু মমতাজ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘খালেদার বাপের নাম কী?’—এ বক্তব্যের পর আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা ‘শেইম শেইম’ বলে স্লোগান দেন।”

শুনানির একপর্যায়ে প্রসিকিউটর আরও বলেন, “আন্দোলনের সময় হাসিনার মন খারাপ থাকলে তিনি গণভবনে গিয়ে তাকে গান শুনাতেন।” এ বক্তব্যে এজলাসে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। কাঠগড়ায় থাকা মমতাজও এ সময় হেসে ফেলেন।

এরপর বিচারক আসামিপক্ষের বক্তব্য শুনতে চান। কিন্তু আসামিপক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। পরে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আইনজীবী রেজাউল করিমকে ডেকে আনেন। বিচারক মমতাজকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি তাকে চেনেন কি না এবং আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিতে চান কি না। সম্মতি দেওয়ার পর মমতাজ ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন। তবে আইনজীবী জানান, এদিন তার পক্ষে কোনো বক্তব্য থাকবে না।

পরে বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে বিচারক মমতাজ বেগমের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মো. সাগর নামে এক শিক্ষার্থী। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। গুলি লাগে সাগরের বুকে এবং পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।

সেই রাতে ছেলেকে খুঁজতে থাকেন সাগরের মা বিউটি আক্তার। রাত ৩টার দিকে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ছেলের মরদেহের সন্ধান পান তিনি। পরে মরদেহ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।

এ ঘটনায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ২৫০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলায় মমতাজ বেগম ৪৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪