একসময় অভিবাসীদের জন্য স্বপ্নের দেশ হিসেবে বিবেচিত কানাডা এখন অনেকের কাছে অনিশ্চয়তা ও দুশ্চিন্তার নাম হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বিদেশি নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে, যা অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
গত ৩১ জানুয়ারি কানাডা সরকার অভিবাসন সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি, শিক্ষাবৃত্তি এবং কর্মসংস্থানের অনুমোদন বাতিলের ক্ষমতা দেওয়া হয় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে পড়েছেন অনেক অভিবাসী, যারা উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কানাডায় এসে এখন আইনি জটিলতা ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।
প্রক্রিয়াগত জটিলতা ও নীতিমালায় পরিবর্তনের কারণে কাগজপত্র নবায়নের সময় অনেক বেড়ে গেছে। অনেকেই সময়মতো বৈধতা রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছেন। ফলে কর পরিশোধ করেও তারা কাজ করার অধিকার, চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সার্ভিস কানাডার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এলএমআইএ (লেবার মার্কেট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) অনুমোদনের সময় তিন গুণ বেড়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যেখানে আবেদন নিষ্পত্তিতে সময় লাগত ৫৮ কার্যদিবস, ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫ কার্যদিবসে। এখনো ২০২৪ সালের এপ্রিলে জমা পড়া অনেক আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়া সরকার অভিবাসন নীতিতে এক ধরনের দ্বৈত অবস্থান নিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগেও অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও, এখন বলা হচ্ছে এই সুযোগ সীমিত আকারে দেওয়া হবে। কেবল নির্দিষ্ট পেশাগত খাতের অভিবাসীরাই এই সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি অভিবাসন সংখ্যা হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা অভিবাসীদের ভবিষ্যত নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এই নীতিগত অস্থিরতা ও প্রশাসনিক জটিলতা অভিবাসীদের জীবনে এক নতুন অনিশ্চয়তা নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি, কানাডার দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসন নীতির দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন:: দুবাইয়ে দুই বাংলাদেশির ভাগ্য খুলে দিল বিগ টিকিট।
