সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি আচরণ সংহিতা প্রণয়ন করেছে সরকার। এই কোড অব কনডাক্টটি সরকারি অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবাগ্রহীতাদের সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী এমন কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না যা তাদের পরিবারের জন্য লাভজনক হতে পারে। তারা সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোনো সুবিধা গ্রহণও করতে পারবেন না।
এছাড়া, সংস্থার অনুমোদন ছাড়া সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কোনো উপহার বা মূল্যবান বস্তু গ্রহণ করা যাবে না। কী ধরনের উপহার বা সুবিধা গ্রহণ করা যাবে তা নির্ধারণ করে রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে।
অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠান বলতে আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, কমিশন, কাউন্সিল, বোর্ড ইত্যাদি বোঝানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে যে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শেয়ার, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ কেনাবেচা বা লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।
এছাড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ সংস্থার সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না, ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য কিছু করতে পারবেন না। অন্য কোথাও পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন চাকরি করা যাবে না।
ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সমানুভূতি প্রদর্শন করতে হবে। জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা বা বৈষম্য মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সেবাগ্রহীতাদের তৃপ্তি বা অসন্তুষ্টি প্রকাশের সুযোগও তৈরি করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি কেনাকাটায় কোনভাবেই প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী লঙ্ঘন করে দরপত্র ডাকা যাবে না এবং ক্রয়প্রক্রিয়া এমনভাবে সম্পাদন করতে হবে যাতে পক্ষপাতিত্ব বা স্বজনপ্রীতির কোনো প্রমাণ না মেলে। অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ বা বৈদেশিক মুদ্রায় দায় সৃষ্টির কোনো অঙ্গীকার করা যাবে না।
এছাড়া, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে বা চাকরিস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও কাজ করা যাবে না।
আরও পড়ুন:: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় যে শাস্তির অনুমোদন দিল সরকার।