রমজান মাসে ধর্মীয় অনুশাসনের পাশাপাশি মানবিক দায়িত্ব নিয়েও অনেকের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে রোজা রেখে কি রক্ত দেওয়া যায়। জরুরি প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হলে অনেকেই পড়ে যান দ্বিধায়।
রমজানে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শারীরিক দেখা দিতে পারে দুর্বলতা। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে রক্ত দিলে রোজা ভেঙে যাবে কিনা। ইসলামি শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয় মানবসেবাকে। কুরআনে বলা হয়েছে যে ব্যক্তি একটি প্রাণ বাঁচায় সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচাল। ইসলামি স্কলারদের মতে রক্তদান রোজা ভঙ্গ করে না যদি এটি অতিরিক্ত দুর্বলতার কারণ না হয়। তবে যদি দুর্বলতা অনুভব হয় তাহলে ইফতারের পর রক্ত দেওয়া উত্তম।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন রোজার সময় রক্ত দেওয়া সম্ভব তবে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। সেহরির পর অথবা ইফতারের কয়েক ঘণ্টা পর রক্ত দেওয়া ভালো। এই সময়ে শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। রক্ত দেওয়ার আগে এবং পরে প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়া উচিত যাতে শরীর পানিশূন্য হয়ে না পড়ে। রক্ত দেওয়ার পর পুষ্টিকর খাবার যেমন খেজুর, দুধ, ডিম, মাছ ও শাকসবজি খাওয়া দরকার যাতে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে।
রমজানে রক্তদাতার সংখ্যা কমে যায় যার কারনে অনেক রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তিরা ইফতারের পর অথবা সেহরির আগে রক্ত দিতে পারেন। এতে রোজাও পালন করা সম্ভব হবে এবং মানবসেবার কাজেও অংশ নেওয়া যাবে। হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণে পরিকল্পিত ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে রমজানে রক্তের সংকট তৈরি না হয়।
রমজান আত্মসংযম ও দানের মাস। রক্তদান শুধু মানবিক কাজ নয় এটি এক ধরনের ইবাদতও। সুস্থ ব্যক্তিরা সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে রোজার সময়ও রক্ত দিতে পারেন এবং মানুষের জীবন বাঁচানোর মহৎ কাজে অংশ নিতে পারেন।
আরও পড়ুন:: তাক্বওয়ার পয়গাম নিয়ে এলো মাহে রামাযান।