ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা এবং যুবলীগের দুই নেতাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মেঘালয় রাজ্যের জুআই আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আদালতে আওয়ামী লীগ নেতাদের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
মেঘালয় রাজ্যের পুলিশের মহাপরিচালক ইদাশিশা নংরাং গণমাধ্যমকে জানান, ডাউকি থানায় করা একটি মামলায় ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মামলা ভারতের ন্যায় সংহিতার চারটি ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় করা হয়েছে।
এর আগে দেশের সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল যে, ধর্ষণের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মেঘালয় পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ নেই।
মেঘালয়ের স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত অক্টোবরে ডাউকি সীমান্তে এক ট্রাকচালকের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। মামলার ধারাগুলোতে মূলত অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা (অগ্নেয়াস্ত্র নয়), হামলার জন্য জমায়েত হওয়া এবং এক লাখ টাকার কম আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সহসভাপতি আবদুল লতিফ (রিপন), এবং সদস্য ইলিয়াস হোসেন (জুয়েল)।
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) ভোরে কলকাতা শহরের হাতিয়াড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন বারাসাত কোর্টে হাজির করার পর আদালত তাদের মেঘালয় রাজ্যের আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন। মঙ্গলবার মেঘালয়ের জুআই আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল সাংবাদিকদের বলেন, শিলংয়ের ডাউকি থানার একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা নম্বর- ১৯(১০)২৪। এতে অবৈধ অনুপ্রবেশ, ছিনতাই এবং গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নানাভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক। আশা করি তারা আইনি প্রক্রিয়ায় সুবিচার পাবেন।’
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নাসির উদ্দিন খানসহ অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালান। তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ শিলংয়ে অবস্থান নেন। শীতের প্রকোপ বাড়ায় এ মাসের শুরুতে তারা কলকাতা যান। সেখান থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
