বিশ্বনাথে স্থানীয় এমপি ও গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানের গাড়িতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে মামলার বাদী এমপির এপিএস অসিত রঞ্জন দেবকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় সিলেটের কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন অসিত রঞ্জন দেব। জিডি নং- ৩৪১৫, তাং- ৩১.০৫.২০২৩ইং।
সাধারণ ডায়েরীতে অসিত রঞ্জন দেব উল্লেখ করেন, গত ৩১ মে সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে বিশ্বনাথ জিআর ১৫৯/২০২০ইং মামলার রায় ঘোষণার ধার্য্য তারিখ ছিলো। ওই দিন বাদী অসিত রঞ্জন দেব ও মামলার বিবাদীরা সকলেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর খালাসপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা, বাদী ও বাদী পক্ষের আইনজীবী আদালত হতে বের হয়ে বারান্দায় আসার পর মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামী বিশ্বনাথ উপজেলার বিদায়সুলপানি গ্রামের ফয়েজ মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন ‘আমার যদি শাস্তি হত তাহলে আমি বাদীকে ক্ষমা করে দিতাম। কিন্ত আসামী শামিমের শাস্তি হওয়ায় সে জেল থেকে বের হয়ে তার আত্মীয়-স্বজনরা বাদীকে বিশ্বনাথে মারপিট করবে এর কোন অন্যতা হবে না।’ এসময় খালাসপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামীরা বাদীকে জড়িয়ে ধরেন। তবে কেন তাকে (অসিত) জড়িয়ে ধরা হয়েছে তা তিনি জানেন না। ফলে বাদী অসিত রঞ্জন দেব ও তার পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যে কোন মূহুর্তে আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্খা করছেন অসিত রঞ্জন দেব।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিবাদী পক্ষকে ঘায়েল করতে এটি বাদী পক্ষের একটি কৌশল। কারণ রায় ঘোষণার পর আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ১০ আগস্ট বিশ্বনাথ উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভায় যোগদানের পথিমধ্যে (উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে) পুলিশি প্রটোকলে থাকা এমপি মোকাব্বির খানের গাড়িতে হামলা করা হয়। হামলায় গাড়ির সামনের গ্লাস ফেটে যায়। ওই ঘটনার পরদিন মোকাব্বির খানের এপিএস অসিত রঞ্জন দেব বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২৫/৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি দীর্ঘ ৩ বছর বিচারাধীন থাকার পর গত ৩১ মে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার অভিযুক্ত বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামিম আহমদকে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর ৪ অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, শ্রমিক লীগ নেতা জুনাব আলী, দৌলতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দবির মিয়া ও যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সেবুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন আদালত।