বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রেমিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক- আইন কী বলে?

Ayas-ali-Advertise
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রেমিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক- আইন কী বলে?
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রেমিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক- আইন কী বলে?।
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রেমিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক- আইন কী বলে?
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রেমিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক- আইন কী বলে?।
Facebook
Twitter
WhatsApp

বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীদের সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রেমিকাকে সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ক করার ঘটনা বর্তমানে সামাজিক উদ্বেগ ও নিন্দার বিষয় হয়ে উঠেছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এ ধরনের অপরাধ কঠোর দণ্ডবিধির আওতায় আসে। দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৫ ও ৩৭৬ অনুযায়ী সম্মতি ছাড়া যে কোনো ধরনের যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়।

সামাজিক ও আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে, কোনও সম্পর্কের শুরুতে সম্মতি থাকলেও পরে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করার অভিযোগ উঠলে তা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৫ অনুযায়ী, প্রথমে দেওয়া সম্মতি পরবর্তীতে বাতিল বলে গণ্য হবে এবং জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক আইনগতভাবে ধর্ষণের আওতায় পড়বে।

যদি ভিকটিম বা পীড়িত ব্যক্তি শিশু বা নাবালিকা (লাবালিখ) হয়, তাহলে বিষয়টি আরো গুরুতর হয়ে ওঠে। দণ্ডবিধির ধারা ৩৭২ অনুযায়ী, নাবালিকাকে যৌন সম্পর্কের ফাঁদে ফেলা বা নির্যাতন করা হলে সেটি বিশেষ কঠোর শাস্তির অধীনে পড়ে। শিশু ও নাবালিকার যৌন নির্যাতন আইনত একটি স্বতন্ত্র ও জটিল অপরাধ, যা কড়া দণ্ডের আওতায়।

আইনজীবীরা বলছেন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ একটি জালিয়াতি এবং নারী অধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অপরাধ। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীকে যৌন সম্পর্কের ফাঁদে ফেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। একইভাবে, প্রেমিকাকে সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ক করলেও সেটি ধর্ষণের শাস্তির আওতায় পড়ে।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ মামলা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০-১৫টি মামলা দায়ের হয়। তবে সামাজিক লজ্জার কারণে অনেক ঘটনা লুকিয়ে থাকে। জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা (UN Women) বাংলাদেশের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, দেশে যৌন সহিংসতার শিকার নারীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঢাকার এক আইনজীবী হাসান মাহমুদ বলেন,“যে কোনো সম্পর্কেই সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ক গ্রহণযোগ্য নয়। আইনে ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে। ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা নিতে পারেন। বাংলাদেশ সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স অ্যান্ড রেপ্রডাকটিভ হেলথ (SVRH) আইনের আওতায় এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

সামাজিক কর্মী ও নারী অধিকারকর্মী সুমাইয়া বেগম বলেন, “বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ সামাজিকভাবে ভয়াবহ অপরাধ। এটি শুধু এক ব্যক্তির নয়, পুরো সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতীক। সচেতনতা বৃদ্ধি ও নির্ভয়ে মামলা করার পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কঠোর আইন প্রয়োগ অপরিহার্য। বিয়ের প্রলোভনে কিংবা প্রেমের জালিয়াতিতে নারী শোষণ রোধে সমাজ ও প্রশাসনের সুসংহত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪