Search
Close this search box.

মেঘ-পাহাড়ের অপূর্ব মিতালি ‘পাহাড় বিলাসে’

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে ফিরে :: আকাশে হেলান দিয়ে ঘুমায় পাহাড়। ভাঁজে ভাঁজে সাদা মেঘের ভেলা। কখনো গায়ে জড়ায় সবুজ-নীলের অপরূপ চাদর। কখনো কেবল শুভ্র মেঘের কায়া। কখনো আবার সবুজ ছাপিয়ে পুরোটাই হয়ে ওঠে মেঘের পাহাড়। সাদা আর সবুজের অপূর্ব মিতালির দেখা মিলে সুনামগঞ্জের সুইজারল্যান্ড খ্যাত ‘পাহাড় বিলাসে’। দু’পাশে বাঁশবাগান, আর গাছগাছালিতে ভরপুর মায়াময়-ছায়াময় পরিবেশ। আছে একফালি সবুজ গালিচা পাতা। এ যেন প্রকৃতির নান্দনিক তুলিতে আঁকা, এক অপরূপ সৌন্দ্যর্য্যরে সমাহার। ‘পাহাড় বিলাসে’র এ দৃশ্য পলকেই নয়ন জুড়ায়। মুগ্ধতায় ভরে মন।

মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জনপদ, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চ্যাংবিল গ্রামে এর অবস্থান। অল্পদিনেই ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে আর্কষনীয় হয়ে উঠেছে এটি। কাছ থেকে মেঘ-পাহাড়ের মিতালী আর মনোহর প্রকৃতি উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রকৃতিপ্রেমী ও পর্যটকরা আসছেন ‘পাহাড় বিলাসে’।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী সলুকাবাদ ইউনিয়নে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে আন্তর্জাতিক সীমারেখার পাশে চ্যাংবিলে ১০ শতক জমিতে ‘পাহাড় বিলাস’ গড়ে তোলা হয়েছে। এর আগে বাঁশ বাগান। বাগান পেরোলেই চোখ জোড়ায় পাহাড় বিলাসের নৈসর্গিক সৌর্ন্দয্যে। সুইজারল্যান্ডের কোন প্রাকৃতিক দৃশ্যের আদলে প্রস্তুত করা হয় এটি। দেয়া হয়েছে সাদা রঙের দৃষ্টিনন্দন কাঠের বেড়া, বসার বেঞ্চ, খড়ের চাউনীর দুটি গোলঘর, একটি দোলনা ও পর্যটকদের হালকা খাবারের দু’টি দোকান। মূল স্পটের সাথেই পানি প্রবাহের নালা। তার উপর চওড়া বাঁশের সাঁকো। সাঁকো পেরিয়েই কাঙ্খিত স্থান। এর একটু দূরেই আন্তর্জাতিক সীমারেখা। ওখান পর্যন্ত গেলে স্পষ্ট চোখে পড়ে সীমান্তের কাঁটাতার। পাশেই হাতছানি দেয় ভারতের মেঘালয় পাহাড়। পাহাড় বিলাসের একপাশে পায়চারি জন্যে ‘ওর্য়াক ওয়ে’ ও প্রকৃতি উপভোগ করতে একাধিক বসার স্থান নির্মানাধীন। মধ্যখানে নির্মিত হচ্ছে পানির ফোয়ারাও। তখন লকডাউন থাকলেও তালাবদ্ধ পাহাড় বিলাসের আশপাশে একাধিক প্রকৃতিপ্রেমীদের ঘুরতে দেখা যায়। কথা হয় সিলেট থেকে আসা প্রকৃতিপ্রেমী যুবক আনোয়ার আলীর সাথে।

তিনি জানান, বিশেষ কাজে কাছাকাছি আসায়, এখানে ঘুরতে এসেছি। সোস্যাল মিডিয়ার যেমনটি দেখেছি, তার’চে সুন্দর পাহাড় বিলাসের প্রকৃতি ও পরিবেশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের আসবো।

জানা যায়, জল-জোছনার শহর, হাওরকন্যা সুনামগঞ্জ নদী, হাওর, মাছ, ধান, আর গানে সমৃদ্ধ। এসবের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য জেলা জুড়ে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। এতে সম্প্রতি যুক্ত হয় ‘পাহাড় বিলাস’ও। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র পরিকল্পনায় এ পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। পরে গেল ২৭ মে ২০২১ইং এর আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের বিরোদী দলীয় হুইপ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, পাড়াহারের ভিউ দেখতে আসা পর্যটকদের জন্যে ‘পাহাড় বিলাস’ গড়ে তোলা। এখানে মেঘালয় পাহাড়ের কাছ থেকে মেঘ-পাহাড়ের অপূর্ব মিতালি অনুভব করা যায়। পাশাপাশি এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এ প্রয়াস।

আরও খবর