পদ্মায় ডুবে যাওয়া লঞ্চের উদ্ধার অভিযানে সরকারের বিরুদ্ধে উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও অক্ষমতার অভিযোগ এনেছে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাতিল, ফিলিস্তিনিতে ইসরাইলের হামলা বন্ধ, তোবা কারখানার শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া মেটানো এবং দলের প্রবীণ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মুক্তিসহ পাঁচ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়াপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক চলাকালীন এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব দাবির কথা জানান। তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, সভায় পদ্মায় লঞ্চডুবির নির্মম মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সীমাহীন উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও অক্ষমতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অবিলম্বে লঞ্চটিকে উদ্ধার এবং ডুবে যাওয়া যাত্রীদের মরদেহ স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সভায় নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়। তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখার হীন উদ্দেশ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল চেতনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করতে সম্প্রচার নীতিমালা করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক এ নীতিমালা রাষ্ট্রীয় সংবিধান ও মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার এবং বিশ্বব্যাপী মুক্ত সাংবাদিকতা বিরোধী। তিনি বলেন, সভা এই নীতিমালার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সভা মনে করে, এই নীতিমালার মাধ্যমে সরকার গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে প্রকৃতপক্ষে একদলীয় স্বৈরশাসন বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি। মির্জা আলমগীর বলেন, বৈঠকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। গাজায় গণহত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের জন্য জাতিসংঘ, আরবলীগ ও ওআইসিসহ বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতি এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়। তিনি বলেন, সভায় তোবা গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী ও বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা করে অবিলম্বে তাদের পাওনা মেটানো ও কাজে যোগদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। সভায় দলের স্থায়ী কমিটির প্রবীন সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে ‘অন্যায়ভাবে’ আটক ও জামিনের বিষয়ে সরকারের অন্যায় হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে কালো পতাকা মিছিল ও সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে ঢাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে ড. আর এ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এমকে আনোয়ার, বেগম সারোয়ারি রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সোমবার রাতে একই সময়ে জোটের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন খালেদা জিয়া।