AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথের খাজাঞ্চীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১১

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ২৩ - ২০২৩ | ১২: ১৬ অপরাহ্ণ

খাজাঞ্চীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: হাওরে জাল পাতা নিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কান্দিগ্রাম গ্রামের বদরুল আলম ও মাওলানা আবদুল হাই জেহাদী পক্ষের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। এতে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ উভয়পক্ষে অন্ততঃ ১১জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের আহতরা হলেন গ্রামের আবদুল মানিকের ছেলে বদরুল আলম (৩৫), হাবিবুর রহমান (২০), আবদুল মানিকের বিবাহিতা মেয়ে, পৌনে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা আছমা বেগম ফাতেমা (১৮), আবদুল ছত্তারের ছেলে শাহিন আহমদ (১৮), সোনাফর আলীর স্ত্রী দিলারা বেগম (৫০), মখলিছ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, ছেলে মাওলানা আবদুল হাই জেহাদী, তার স্ত্রী মুরশিদা বেগম, ছেলে খায়রুল ইসলাম ফাহিম। এছাড়াও, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হন শাহসাহেবের গ্রামের গয়াছ মিয়ার ছেলে রায়হান আহমদ (২১) ও মানিক মিয়ার ছেলে আফজল মিয়া (২৩)।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, গ্রামের বদরুল আলম ও আবদুল হাই জেহাদী পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামের পশ্চিমের হাওরে জাল পাতা নিয়ে প্রথমে বদরুল আলমের ভাই হাবিবুর রহমান ও আবদুল হাই জেহাদীর ছেলে খায়রুল ইসলাম ফাহিমের মধ্যে কথাকাটি হয়। এর জেরে পরবর্তীতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

বদরুল আলম জানান, ‘আবদুল হাই জেহাদীর ঘরে নিয়মিত জামাত-শিবিরের গোপন মিটিং হয়। সেটা করতে বারণ করায় এবং তার ছেলে আমার বোনকে উত্যক্ত করার কারণে তার কাছে বিচারপ্রার্থী হওয়ায় আবদুল হাই জেহাদী অনেকদিন ধরে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে আবদুল হাই জেহাদী যেকোনোভাবে আমাদেরকে ভিটে ছাড়া করতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে আমার আমার ছোটভাই হাবিবুর রহমান বাড়ির পশ্চিমের হাওরে মাছ ধরতে জাল পাতে। সন্ধ্যায় সেই জাল তুলতে গিয়ে সে দেখে আবদুল হাই জেহাদীর ছেলে খায়রুল ইসলাম ফাহিম সেই সেটি তুলে ফেলেছে। এর কারণ জানতে চাইলে ফাহিম আমার ভাইয়ের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। অতঃপর সেখান থেকে চলে এসে বিষয়টি তার পিতা আবদুল হাই জেহাদীকে বললে তিনি অকথ্য ভাষার আমাদেরকে গালাগাল শুরু করেন। এ সময় আমার খালা দিলারা বেগম কি হয়েছে জানতে এগিয়ে গেলে তার উপর হামলা চালান আবদুল হাই জেহাদী ও তার ছেলে ফাহিম। খালাকে রক্ষা করতে আমরা এগিয়ে গেলে তারা আমাদের উপরও অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকালে ফাহিম আমার অন্তঃসত্ত্বা বোন আছমা বেগম ফাতেমার তলপেটে লাথি দিলে তার পৌনে দুই মাসের সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়।’

মাওলানা আবদুল হাই জেহাদী বলেন, ‘আমাদের উপর আনিত সকল অভিযোগ মিথ‌্যা ও ভিত্তিহীন। বদরুল আলম গংরা আমাকে ও আমার পরিবারকে বাড়িছাড়া করতে দীর্ঘদিন ধরে নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। ঘটনার দিন আমার ছেলে হাওরে মাছ ধরতে জাল পাতে। এনিয়ে আমার ছেলের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই অভিযুক্তরা অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি, আমার স্ত্রী ও ছেলে গুরুতর আহত হয়েছি। আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্খাজনক।’

এ দিকে এই ঘটনায় মাওলানা আবদুল হাই জেহাদীর ছেলে খায়রুল ইসলাম ফাহিম বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) রাতে ১২জনকে অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৬।

মামলার দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বিশ্বনাথনিউজকে জানান, ‘এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

আরো সংবাদ