Search
Close this search box.

মেদ বা ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায়

বিশ্বনাথনিউজ ২৪::: পেটের বাড়তি মেদ একটি বিব্রতকর ও বিরক্তিকর বিষয়। সাধারণত আলসে জীবনযাপন, শরীরচর্চা বা কায়িক পরিশ্রম না করা, বেশি খাবার খাওয়া, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ বা বেশি ক্যালোরিযুক্ত যেকোনো খাবারই পেটের  মেদ বাড়াতে পারে। এ ছাড়া বংশগত কারণও রয়েছে। বিজ্ঞান বলছে, ভুঁড়ি শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে ভুঁড়ি থাকার অর্থ হলো, আপনার পেটের ভেতরেও রয়েছে চর্বি। এই চর্বি জমতে পারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গের উপর। তার থেকে দেখা  দেয় সমস্যা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা  গেছে, পেটে ভুঁড়ি থাকলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে। এর ফলে বাড়ে সুগার।

একবার পেটে মেদ জমলে সেটা কাটিয়ে ওঠা যাবে না- এ ধারণা কিন্তু ভুল। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্থ, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে সহজে মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

সাধারণত মদ্যপান, মিষ্টি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবার,  কোমল পানীয় বা কোলা জাতীয় পানীয়, অস্বাস্থ্যকর বাইরের খাবার, নিয়মিত লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া, স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ ইত্যাদি পেটের  মেদ বাড়াতে সহায়তা করে।

গবেষকেরা দেখেছেন, যখন একই  তেল বারবার ব্যবহার করা হয়, তখন  সেখানে ট্রান্সফ্যাট উৎপন্ন হয়। ট্রান্সফ্যাট পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয়। তাই ভাজা-পোড়া না খাওয়াই ভালো। আর পেটের মেদ অতিরিক্ত জমে যাওয়ার আগেই সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

ভুঁড়ি কমাতে যা করতে পারেন: 
– খাদ্য তালিকায় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন-লাল চাল বা লাল আটার তৈরি খাবার এবং শাকসবজি ও ফলমূলজাতীয় খাবারে মিলবে আঁশ।
– গ্রিন-টিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা পেটের মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর। তাই দুধ ও চিনির চা পানের অভ্যাস বদলে গ্রিন-টিতে অভ্যস্ত হতে হবে।
– আখরোট, কাঠবাদাম ও সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। তাই এসব খাবার পেটের মেদ কমাতে কার্যকর।
– দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ সমৃদ্ধ ঝাল খাবার খান,  পেটের মেদ কমে যাবে এবং এগুলো  পেটের মেদ কমাতে কার্যকর।
– কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকালবেলা চুষে খান। এই অভ্যাসের ফলে দ্রুত আপনার ওজন কমবে আর  পেটের মেদ ঝরবে। কাঁচা রসুন শরীরের রক্তপ্রবাহ সহজ করে। পেটে  মেদ জমতে দেয় না।
– সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন।। এতে শরীরের হজমপ্রক্রিয়া ভালো থাকবে এবং শরীরে মেদ জমার প্রক্রিয়া ধীর হবে।
– খাবার খাওয়ার পর পরপরই লম্বা বিশ্রাম বা শুয়ে পড়বেন না। এতে সঠিকভাবে পরিপাক হয় না, ফলে  পেটে চর্বি জমতে থাকে। সে জন্য খাবার খাওয়ার পর একটানা শুয়ে-বসে না থেকে ১৫ হতে ২০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা উচিত।
– যারা সব সময় চেয়ারে বসে কাজ করেন, তাদের পেটে সহজে মেদ জমে যায়। তাদের উচিত ৩০-৪০ মিনিট বসে কাজ করার পর উঠে ১০-১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা।
– একবারে বেশি খাবার গ্রহণ না করে অল্প অল্প করে বারবার খাবার গ্রহণ করুন। সারা দিনের অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার খাবারকে ৫-৬ বারে গ্রহণ করুন।  সেখানে তিনবার প্রধান খাবার ও দুই-তিনবার নাশতা জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
– বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ঠিক মতো ঘুমাতে পারলে শরীর সুস্থ থাকতে পারে। এমন কী বিপাক ঠিকমতো হয়। ফলে সহজেই শরীরে ফ্যাট ঝরে যেতে পারে। তাই আপনাকে ঘুমাতে হবে।
– প্রোটিন (Protein) হলো শরীরের খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাদ্য উপাদান। তাই প্রোটিন আপনাকে  খেতেই হবে। এক্ষেত্রে ফ্যাটের বদলে শরীরে পেশির আধিক্য চাইলে আপনি  প্রোটিন খান। এর ফলে শরীর হবে শক্তিশালী। আপনি থাকতে পারবেন সুস্থ।

– মিষ্টি খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। এই পরিমাণ ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করলে দেখা দিতে পারে সমস্যা। তাই মিষ্টি খাবার একেবারেই খাওয়া চলবে না। বরং ভালো খাবার খান। খেতে হবে সবুজ শাকসবজি।

– ভুঁড়ি কমাতে চাইলে ব্যায়ামের থেকে ভালো কোনো উপায় আমাদের কাছে  নেই। তাই পারলে প্রতিদিন করুন ব্যায়াম। ব্যায়াম করতে পারলেই শরীর  থেকে দ্রুত ঝরে যাবে ফ্যাট। তাই সাবধানে থাকুন।

আরও খবর