Search
Close this search box.

ইসিকে চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়ন জমা দিলেন পৌর মেয়র

ইসিকে চ্যালেঞ্জ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: নির্বাচন কমিশন (ইসি)’কে চ্যালেঞ্জ করে আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সহকারী রিটার্ণিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা আক্তারের নিকট ওই মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর পূর্বে পৌর মুহিবুর রহমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য’ হিসেবে নিজের প্রার্র্থীতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

পদে (বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র) থেকে নির্বাচন করা যাবে না নির্বাচন কমিশন এমন নির্দেশনা দিলেও এক কথায় মেয়র পদে থেকেই ইসিকে চ্যালেঞ্জ করে ওই মনোনয়নপত্র জমা দিলেন পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান।

মুহিবুর রহমান বলেন, প্রথম বিশ্বনাথ পৌরসভার নির্বাচন আসলো তখন পৌরবাসী আমাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত করেন। এলাকার মানুষের আগ্রহে মেয়র হিসেবে নির্বাচন করি। সেই নির্বাচনে সকল দলের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও আমাকে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেন বিশ্বনাথবাসী। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। কিন্তু পৌরসভার পরিধি সীমিত। ইচ্ছা থাকলেও অনেক কাজ করা যায় না। আমি যা কিছু করি সেগুলো আমার ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে প্রকাশ প্রায়। যা দেখে দেশ-বিদেশের সবাই বলেন আমি যা করতেছি ভালই করতেছি। তাই আমি যদি এমপি নির্বাচিত হই তাহলে আমি বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরে একটি করে দরবার বসাবো। প্রতি সপ্তাহে একদিন যেখানে বসে গ্রামে-গঞ্জে যত বিচার আচার আছে সেগুলো আমরা সমাধান করবো।

মুহিবুর রহমান বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো। যদিও মেয়র পদে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করা আমার জন্য চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। আমি সেই চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে বিশ্বনাথের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মুহিবুর রহমান। এরপর ১৯৯১ সালে সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিব। এসময় তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী জাতীয় পার্টির মকসুদ ইবনে আজিজ লামার কাছে হেরে যান তিনি। ২০০১ সালে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও সামান্য ভোটে ইলিয়াস আলীর কাছে পরাজিত হতে হয় তাকে।

২০০৩ সালে আবারও আওয়ামী লীগে যোগদান করে রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি এবং ২০০৮ সালে তৃণমূল আওয়ামী লীগের সমর্থনে দলীয় মনোনয়ন পান মুহিব। কিন্তু মনোনয়ন চুড়ান্ত হবার একদিন পর মনোনয়ন পেয়ে যান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। তারপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও দলীয় নেতাকর্মীদের চাপে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তিনি। ওই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে এমপি হন শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তারপর ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে ২য় বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মুহিবুর রহমান এবং পরর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে ২০১৪ সালের ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিবুর রহমান। কিন্তু ওই নির্বাচনেও মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ইয়াহইয়া চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন মুহিবুর রহমান। নির্বাচনে হেরে যাবার পর ওই বছরের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান মুহিব।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হন মুহিব। কিন্তু ওই নির্বাচনে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানের কাছে পরাজিত হন মুহিব। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২ নভেম্বরের বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতীকের প্রার্থীকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে পৌরসভার প্রথম মেয়র নির্বাচত হন মুহিবুর রহমান। পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মাথায় এবার এমপি (সংসদ সদস্য) হতে চান তিনি।

আরও খবর