বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের ছোট খুরমা গ্রামের মোল্লাবাড়ির রাস্তার উন্নয়ন কাজ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীণ মন্তব্য এবং অপপ্রচারের প্রতিবাদে সভা করেছেন ওয়ার্ডবাসী।
২নং ওয়ার্ডের মেম্বার সভাপতি রিয়াজ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ছোট খুরমা গ্রামের মোল্লাবাড়ির রাস্তার উন্নয়ন করা নিয়ে বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই বিষয়টি ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়নের গণ্যমান্য মুরব্বিয়ানের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকে আপুষের মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়। তথন স্থায়ীভাবে বিরোধ নিস্পত্তির করার স্বার্থে উপস্থিত মুরব্বিয়ান ইউপি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন যাতে মোল্লাবাড়ির চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি পাকাকরণ করে দেন। এতে সম্মতি জানিয়ে প্রতিশ্রুতি দেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল এবং এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে মোল্লাবাড়ির শতবছরের পুরনো রাস্তাটি সিসি ঢালাই কাজ করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৯০ হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহন করা হয়। পবিত্র ঈদুল আযহার ৩দিন আগে রাস্তার সিসি ঢালাইর কাজ শুরু হয়ে ঈদের ১২দিনের মাথায় তা সম্পন্ন করা হয়। কিন্ত কাজ সম্পন্নের শেষ প্রান্তে এসে কাজে বাধা দেন গ্রামের বাসিন্দা আকমল হোসেনের ছেলে ছাদ আলী। তখন তার কাছে কাজের শেষ পর্যায়ে এসে বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চান স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বার রিয়াজ আলী।
তখন ছাদ আলী জানান, যে জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা রয়েছে সেই জায়গা নিয়ে মোল্লাবাড়ির বাসিন্দাদের সাথে তাদের বিরোধ রয়েছে। এমনকি মোল্লাবাড়ির পক্ষ হতে এবিষয়ে একাধিক মামলাও আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। পরবর্তীতের উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন ইউপি চেয়ারম্যান। সরকারিভাবে রাস্তার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে জানিয়ে তখন চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে আশ্বস্ত করেন আপাদত রাস্তায় কোন সাইনবোর্ড বসানো হবে না। মামলা নিস্পত্তি হওয়ার পর যার পক্ষে আদালত রায় দিবেন তার নাম বসিয়ে সাইনবোর্ড লাগানো হবে। এতে সম্মতি জানান উভয় পক্ষ। কিন্ত এর ২/৩ দিন পরই একটি অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয় ‘তিনি (চেয়ারম্যান রুহেল) মোল্লাবাড়ির বাসিন্দাদের পক্ষে মামলার রায় পায়িয়ে দিতে তাদের কাছ থেকে ২লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে ৯০ হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে রাস্তাটি পাকা (সিসি ঢালাই) করে দিয়েছেন’।
বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে গ্রামবাসী বলেন ‘ওই রাস্তাটি শত বছরের পুরনো এবং মোল্লাবাড়ির চলাচলের একমাত্র রাস্তা। মোল্লাবাড়ির বাসিন্দাদের সাথে আকমল হোসেন গংদের কোন বিরোধ বা মামলা মোকদ্দমা চলে আসলেও বিষয়টি চেয়ারম্যান তো দূরের কথা গ্রামের কোন লোকেরই জানা নেই। ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে রাস্তাটি সিসি ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানকে সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই’।
সভায় মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা রায়হান আলী বলেন, আমাদের মৌরসি জায়গার উপর দিয়ে এই রাস্তাটি আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। রাস্তার দু’পাশ্বের মোট ২৪ শতক জায়গার মালিক বাড়ির ৬জন বাসিন্দা। তাদের মধ্যে দুই অন্যত্র চলে গেছেন। আর ওই দুই জনের কাছ থেকে অতি গোপনে পুরো জায়গা দলিল করে নিয়েছেন আকমল হোসেন গংরা। বিষয়টি জানতে পেরে ২০১৬ সালে আমার ভাই শফিক মিয়া আদালতে একটি সত্ত্ব মামলা দায়ের করেন এবং শফিক মিয়া গংরা বাদি হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ওই দুটি মামলা আদালতে বিচারিধীন রয়েছে। তিনি বলেন রাস্তা পাকাকরণ করতে আমাদের কাছে একটি টাকাও দাবি করেননি চেয়ারম্যান। ইউনিয়নের গণ্যমান্য মুরব্বিদের অনুরোধে রাস্তাটি তিনি পাকা করে দিয়েছেন।
প্রতিবাদ সভায় মুরব্বি মো. মনিরুজ্জামান, তাহির আলী, রুহুল আমিন ফয়ছল, বিরাই মিয়া, মাশুক মিয়া, ইছাল মিয়া, আব্দুল আহাদ, আসিক মিয়া, আরশ আলী, রায়হান উদ্দিন, আব্দুল আজিজ, নেছার আলী, মক্তার আলী, সাহেদ আলী, আব্দুন নুর, আব্দুল ওয়াহিদ, নছিব উল্লাহ, আব্দুল জব্বার, রহমত আলী, মতিউর রহমান ময়ূর, আবুল বশর, নূর ইসলাম, হুছন আলী, নুর উদ্দিন, কয়েছ মিয়া, রুহেল খান, আলেক মিয়া, আব্দুল খালিকসহ ওয়ার্ডের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।