AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যার অভিযোগ : ২ বৃদ্ধ গ্রেফতার

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: আগস্ট - ২২ - ২০২১ | ৩: ০২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় ২ বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মখলিছুন বেগম (৩২) নামের ওই নারী। তিনি উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের আবদুস সালামের মেয়ে।

জানা যায়, নিহত মখলিছুন বেগম স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। বাবা দরিদ্র হওয়ায় তিনি লামাকাজি বাজারের নৈশপ্রহরী মির্জারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কমলা মিয়ার বাসায় বেশ কিছুদিন ঝিয়ের কাজ করেন। এর সুবাধে কমলা মিয়া তার সত্তরোর্ধ্ব বিয়াই উপজেলার সত্তিশ গ্রামের রইছ আলীর সঙ্গে তাকে (মখলিছুন) বিয়ে দেয়ার ফন্দি আটেন। নানা প্রলোভন দেখিয়ে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ রইছ আলীর সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয় তাকে। বিয়ের চার দিনের মাথায় রইছ আলী জানতে পারেন, তার নব-বিবাহিতা স্ত্রী মখলিছুন বেগম অন্তঃসত্ত্বা। পরে দুই বিয়াই মিলে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করান তার। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর রইছ আলী মখলিছুন বেগমকে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তাকে পিতার বাড়িতে রেখে যান দুই বিয়াই। মখলিছুন বেগমের শারীরিক অবস্থা আরও নাজুক হয়ে যায়। পরে গত ২০ আগস্ট শুক্রবার তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় ফের হাসপাতালে পাঠান তার বাবা। ওইদিন রাতেই কমলা মিয়া ও তার বিয়াই রইছ আলীকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মখলিছুন বেগম। রবিবার (২২ আগস্ট) সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।

মখলিছুন বেগমের বাবা আব্দুস সালাম জানান, মেয়েকে বাড়িতে রেখে চাকুরি সূত্রে তিনি সিলেট শাহপরাণ এলাকায় থাকেন। আর এই সুযোগে তার অজান্তেই মেয়ে মুখলিছুন বেগমকে রইছ আলী সাথে অবৈধভাবে বিয়ে দেন কমলা মিয়া। বাড়ির একজন মহিলা গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যারাতে স্থানীয়দের সূত্রে তিনি খবর পান তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে দেখেন মখলিছুন বেগম বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে আছেন। আব্দুস সালাম তৎক্ষণাত স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালামকে খবর দিলে রাত ১০টার দিকে তিনি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ধর্ষণ করে মেয়ে মুখলেছুন বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আব্দুস সালাম।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম জানান, তখন তার বাবা আব্দুস সালাম আমি মামলা দায়ের করতে বিশ্বনাথ থানায় যাই। এই সুযোগে একজন অজ্ঞাতনামা নারী অভিভাবক পরিচয় দিয়ে হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে লাশ নিয়ে লামাকাজীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং পলিথমধ্যে মদিনা মার্কেট এলাকায় ওই অজ্ঞাতনামা নারী অ্যাম্বুলেন্স থেকে মেনে যান। এরপর রাত ১২টার দিকে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও আমি হঠাৎ খবর পাই- লামাকাজীতে একজন নারীর লাশ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স অনেকক্ষণ ধরে ঘুরাঘুরি করছে। পরে সেটি স্থানীয় জনতা আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও আমি লামাকাজীতে গিয়ে মখলিছুনের লাশ শনাক্ত করি। পরে পুলিশকে খবর দেই।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরো সংবাদ