Search
Close this search box.

বিশ্বনাথে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে পিকেটিং করার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে আড়াই ঘন্টাব্যাপী সংর্ঘষ হয়েছে। রোববার (২৮ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বৃহত্তর আমতৈল ও ধলিপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হরতালের সমর্থনকারীরা কর্তৃক প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ সটগানের ৯০ রাউন্ড গুলি ও ৭ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। উপজেলার বিশ্বনাথ-লামাকাজী রোডের পিছের মুখ নামক স্থানে চলা সংঘর্ষে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ৫ সদস্যসহ উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৪ জন। এঘটনায় এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনাখাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েম করা হয়েছে।

সংঘর্ষে ধলিপাড়া গ্রামের আহতরা হলেন, আফাজ উদ্দিন সুবল (৪৫), খায়রুল আলম (৩০), কাচা মিয়া (৩৫), আব্দুল কদ্দুছ (৭০), আব্দুছ সালাম (৬২), ইমাম উদ্দিন (৩৬), ওয়াছিদ আলী (৫২), নেছার আলী (৩১), এনামুল হক (২৮), আখলাক আহমদ (১৬), ইমন আহমদ (১৮), শিপু মিয়া (২৫), মিলাদ আহমদ (৩৫), ছানোয়ার (২০), আমিরুল ইসলাম (৩০) নজির আহমদ (৩১), জাবের মিয়া (২১), জহিরুল ইসলাম (৩৮)।

আমতৈল গ্রামের আহতরা হলেন- মুফতি ফারুক আহমদ (৪৮), গুলচর আলী (৫০), সাইদুল ইসলাম (২৫), চান মিয়া (৩৫), মোহন মিয়া (৪৫), ফয়সল আহমদ (১৪), রাসেল আহমদ (২৫), ফারুক মিয়া (৩৫), আলী আকবর (২৫), জয়নাল মিয়া (৫২)। আমতৈল গ্রামের আরো অনেকেই আহত হলেও মামলার ভয়ে নাম প্রকাশ করছেন না। তবে আহতদের মধ্যে রাসেল আহমদ, আলী আকবর, জয়নাল মিয়া ও গুলচর আলী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

এছাড়া হামলায় বিশ্বনাথ থানার এসআই আফতাবুজ্জামান রিগ্যান, কনস্টেবল নাহিদ, জাবেদ, ইমরান ও আব্দুল আলীম আহত হন। গুরুতর আহত পুলিশ কনস্টেবল নাহিদ ও গুলিবিদ্ধ ৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ-লামাকাজী রোডের ‘পিছের মুখ’ নামক স্থানে রোববার সকাল থেকেই আমতৈল দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাওলানা ফারুক আহমদের নেতৃত্বে পিকেটিংয়ে নামেন ওই এলাকার হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এসময় পার্শ্ববর্তী ধলিপাড়া গ্রামের ড্রাইভার খায়রুল ইসলাম তার ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট ১৮-৯৮২৩) নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে তাকে বাঁধা দেন হরতালের সমর্থনে পিকেটিংকারীরা। এক পর্যায়ে পিকেটাররা ড্রাইভার খায়রুল ইসলামের উপর হামলা করে। এসময় ধলিপাড়া গ্রামের লোকজন এসে পিকেটারদের বাঁধা দেন। পরবর্তিতে মুফতি ফারুক আহমদ বৃহত্তর আমতৈল গ্রামের বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ইসলাম বিরোধীরা তাদের উপর হামলা করেছে বলে ঘোষণা দেন। মূহুর্তেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই গ্রামের প্রায় দুই হাজারেরও অধিক মানুষ। হামলা চলাকালে আমতৈল গ্রামের লোকজন ধলিপাড়া গ্রামের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশের সদস্যরা সেখানে গেলে হরতালের সমর্থনে পিকেটারদের নেতৃত্বদানকারী মুফতি মাওলানা ফারুক আহমদ পক্ষের (আমতৈল গ্রামের) লোকজন পুলিশের উপরও হামলা করে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সটগানের প্রায় ৯০ রাউন্ড গুলি ও ৭ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।

এদিকে, বিশ্বনাথ থানা পুলিশ এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করেছে। ঘটনার পর ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. কামরুজ্জামান, ওসমানীনগরের সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার্স ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, হরতালে পিকেটিং করতে গেলে এই সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গেলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। এতে পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়েছেন।

আরও খবর