বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ায় আমেরিকা প্রবাসী স্ত্রীর মহিলার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় পর্ণোগ্রাফি আইনে দায়েরকৃত মামলায় ডিভোর্স প্রদানকারী মহিলার স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেফতার করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চরচন্ডি গ্রামের হাজী ইদ্রিছ আলীর পুত্র নুরুজ্জামান মিনার (৩২) ও তার বড় ভাই আনহার আলী (৪২)। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের মশুলা (মজলিশ ভোগশাইল) গ্রামের আলতাব আলীর পুত্র আলকাছ আলী (৪২) বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুই আসামিসহ ৫জনের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি আইনে শনিবার বিশ্বনাথ থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-১৪, তাং- ১২.০৯.২০২০ইং।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- মোগলাবাজার থানার তুরকখলা গ্রামের মৃত আমির আলীর পুত্র সোলেমান আহমদ (৪৬), জকিগঞ্জ থানার বিয়াবাইল (মৌলভীচক) গ্রামের মৃত সাখাওয়াত আলীর লস্করের পুত্র হানিফ আলী লস্কর (৪৩) এবং ওসমানীনগর উপজেলার নিজ মান্দারুকা গ্রামের সামছুউদ্দিনের স্ত্রী রিপা বেগম (৩৮)।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বিশ্বনাথ উপজেলা সদরস্থ একটি ইংলিশ স্পেকেন সেন্টারে যাওয়া আসার সুবাদে তার বোন মিনারা বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয় অভিযুক্ত নুরুজ্জামান মিনারের। একপর্যায়ে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর বাদীর পরিবারের অজান্তেই ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর তার বোন মিনারা বেগমকে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এবং এর পরদিন ২৯ ডিসেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ন নিকাহ রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে বিয়ে করেন নুরুজ্জামান মিনার। মা-বাবা আমেরিকা থাকার সুবাদে মিনারা বেগম ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর আমেরিকা চলে যাওয়ার কিছুদিন পর ওই বিয়ের বিষয়টি বাদীকে অবহিত করেন অভিযুক্ত আনহার আলী।
পরবর্তিতে ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ মিনারা বেগম আমেরিকা থেকে দেশে ফিরলে উভয় পরিবারের লোকজন তাদের বিয়ে মেনে নিয়ে ওই বছরের ১১ এপ্রিল সামাজিকভাবে ২৫ লাখ টাকা কাবিননামার মাধ্যমে পুনঃরায় বিয়ের আনুষ্টানিকতা করা হয়। বিয়ের মাস খানেক পর ১৫ মে আমেরিকা চলে যান মিনারা বেগম। এর পর থেকে মিনারা বেগমকে বিভিন্ন সময় টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন স্বামী নুরুজ্জামান মিনার। দেশে থাকতেও টাকার জন্য অশুভ আচরণ করতো মিনার। এর পূর্বে কৌশলে মোবাইল ফোনে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন ধরণের ভিডিও আর ছবি ধারণ করে রাখে স্বামী নুরুজ্জামান মিনার। টাকা না দেয়ায় এসকল গোপন ছবি আর ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় মিনার। আর এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ সালের ৬ডিসেম্বর তার আমেরিকা থেকে স্বামী নুরুজ্জামান মিনারকে ডিভোর্স দেন মিনারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বের ধারণকৃত ওই ছবি আর ভিডিও গুলো বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক একাধিক আইডির মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় নুরুজ্জামান মিনার।
এঘটনায় মিনারা বেগমের বড়ভাই আলকাছ আলী বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তারা দুই সহোদরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই নুর হোসেন, গ্রেফতারকৃত আনহার আলীকে রোববার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর আসামী নুরুজ্জামান মিনারকে অসুস্থতার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে।