AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে নববধূ নিখোঁজের ঘটনায় সরকারি কর্মচারী রোজিনা’সহ গ্রেফতার ২ : মামলা দায়ের

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ২১ - ২০২০ | ৫: ২৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে বাবার বাসা থেকে কোহিনুর আক্তার আশা (২১) নামের এক নববধূ নিখোঁজের ঘটনায় বি-বাড়িয়া জেলার দেবীদ্বার থানার গজারিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী ও বিশ্বনাথ উপজেলা সমবায় অফিসের সাবেক কর্মচারী (এমএলএস) রুজিনা আক্তার (৩০) এবং বি-বাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার ভবানীপুর গ্রামের মৃত আলমগীর সরকারের ছেলে রাজিব সরকার (২৫)’কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। রোজিনার আপন ভাই রাজিব। নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করার অফিযোগে সোমবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় তাদেরকে আটক করে পুলিশ।

এবিষয়ে নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশা’র পিতা বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী রমজান মিয়া বাদি হয়ে রোজিনা ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৫। তবে এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি নিখোঁজ কোহিনুরের। গত ৯ জুলাই সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন কোহিনুর।

জানা গেছে, বিবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানার পানিশ্বর গ্রামের রমজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত। সেই সুবাদে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের জানাইয়া রোডস্থ তেরাবুন ভিলায় ভাড়াটিয়ে হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায় ৫বছর পূর্বে আত্মীয় উমান প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার বড় মেয়ে কোহিনুর আক্তার আশার বিয়ের ঠিক করা (এনগেজমেন্ট) হয়। গত ৫ জুন বিবাড়ীয়া জেলার নিজ বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা ও আলমগীর হোসেনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর স্বামী আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ১৯ জুন বিশ্বনাথে বাবার বাসায় আসেন কোহিনুর। এরপর গত ৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। তখন বাসার আশপাশ ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের খোঁজাখুজি করে মেয়ে কোহিনুরের কোন সন্ধ্যান না পাওয়ায় পরদিন ১০ জুলাই বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন রমজান আলী।

কোহিনুর আক্তার আশার পিতা রমজান আলী ও মা সুচনা আক্তার রুবী অভিযোগ, তাদের এলাকার মেয়ে রুজিনা আক্তার বিশ্বনাথ উপজেলা সমবায় অফিসে এমএলএস পদে কর্মরত থাকার সুবাদের তার সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের। রুজিনা বর্তমানে ছাতক উপজেলায় কর্মরত থাকলেও তিনি বিশ্বনাথে বসবাস করে আসছেন। কোহিনুর নিখোঁজের একদিন পর ১১ জুলাই সকালে তাদের বাসায় আসেন রুজিনা। এসময় কোহিনুর বিশ্বনাথেই রয়েছে এমনটাই তার পরিবারকে বলেন রুজিনা। তাই কোহিনুরকে উদ্ধারের জন্য রুজিনা সিলেটে তার পরিচিত জয় নামের একজনের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দেন এবং তার এই পরামর্শেই কোহিনুরের পিতা-মামা রোজিনার সঙ্গে সিলেট শহরে গিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে জয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তখন কোহিনুরকে উদ্ধার করতে খরচপাতির কথা বলে কোহিনুরের পরিবারের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকা নেন রুজিনা। কথা ছিলো তিন দিনের মধ্যে কোহিনুরকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফেতর দেওয়ার। কিন্তু তিনদিন পর কোহিনুরের পরিবারকে রুজিনা জানান জয় এক মাসের জন্য কোথাও চলে গেছেন তাই তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। পরবর্তীতে আশাকে উদ্ধারে র‌্যাবের সহায়তা লাগবে জানিয়ে আরও ৫ লক্ষ্য টাকা দাবি করেন রোজিনা। কিন্তু এতে অপারগতা প্রকাশ করেন কোহিনুরের পরিবার। এরপর কোহিনুরের পিতা-মাতার বিরুদ্ধে তার স্বামীকে মামলা দায়ের করতে বলেন রোজিনা। তা না হলে অপহরণকারীরা তাকে (কোহিনুরের স্বামীকে) তুলে নিয়ে যাবে বলেও হুমকি দেন রোজিনা। কোহিনুরের পরিবারের ধারণা নিখোঁজ হওয়ার পিছনে রুজিনার হাত রয়েছে।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, উদ্ধারের নামে টাকা চাওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামরায় রোজিনা ও তার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিখোঁজ মেয়েটির সন্ধানে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

আরো সংবাদ