বিশ্বনাথে পশু চিকিৎসকের লালসার শিকার দরিদ্র কৃষককন্যা

Ayas-ali-Advertise
বিশ্বনাথে পশু চিকিৎসকের লালসার শিকার দরিদ্র কৃষককন্যা
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভিএফএ পদে কর্মরত মো. সাদেকুল ইসলাম।
বিশ্বনাথে পশু চিকিৎসকের লালসার শিকার দরিদ্র কৃষককন্যা
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভিএফএ পদে কর্মরত মো. সাদেকুল ইসলাম।
Facebook
Twitter
WhatsApp

সিলেটের বিশ্বনাথে এক দরিদ্র কৃষককন্যা পশু চিকিৎসকের লালসার শিকার হয়ে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। কথিত ‘বিয়ের প্রতারণায়’ পড়ে ওই চিকিৎসক তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফাঁদে ফেলেন। নিকাহ রেজিস্ট্রার ছাড়া মৌখিকভাবে বিয়ে করেন এবং ৯ মাস পর সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে তালাক দেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর, ওই অসহায় পরিবার অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো সমাধান পায়নি।

সুত্রে জানা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভিএফএ পদে কর্মরত নেত্রকোনার আবদুল গফুরের ছেলে মো. সাদেকুল ইসলাম এই প্রতারণার সাথে জড়িত। পশুর চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি তাঁতিকোনা রাজমোহাম্মদপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক হুসমত আলীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এসময় তার নজর পড়ে কৃষকের বিবাহিত কন্যার প্রতি। স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় মেয়েটি বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রস্তাব দিলে পিতা তা প্রত্যাখ্যান করলেও, অর্থ ও অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে পরিবারের সম্মতি আদায় করেন সাদেকুল। নিজের খরচে আদালতের মাধ্যমে আগের স্বামীর সাথে মেয়েটির বিচ্ছেদও করান।

পরে, নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ের কথা থাকলেও একদিন সন্ধ্যায় (২৩.০৩.২০২৩ইং) দু’জন হুজুর নিয়ে হাজির হন কনের বাড়ি। নিকাহনামা পরে সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পাদন করা হয় নামমাত্র কথিত বিয়ে। দেয়া হয় নগদ লক্ষ টাকা দেনমোহর। তখন ধারণ করতে দেয়া হয়নি কোনো ছবি বা ভিডিও চিত্রও। ওইদিনই ওই মেয়েকে পৌরশহরের ভাড়া বাসায় নিয়ে তোলেন সাদেকুল। সংসার করেন প্রায় ৮ মাস। মেয়ের কাছে যেতে চাইলেও তার আপত্তির কারণে বাসায় একদিনও যাওয়া হয়নি তার মা-বাবার। প্রতিদিন তাকে রাখা হতো তালাবদ্ধ করে। বিষয়টি সহজ ভাবে নিচ্ছিলেন না ওই মেয়েও। এ নিয়ে হয় বাকবিতন্ডাও। এক পর্যায়ে তিনি চলে যান পিত্রালয়ে। কিছু দিন তার কাছে যাতায়াত করেন সাদেকুলও।

২৪ নভেম্বর মেয়ের বাবাকে কিছু টাকা দিয়ে সাদা কাগজে টিপসই নিয়ে তালাক দেন সাদেকুল। তিনি মেয়েটিকে জানান, ‘আমরা দুজনের সম্মতিতে তালাক সম্পন্ন হয়েছে।’ এ ঘটনায় প্রাণিসম্পদ অফিসে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো সমাধান পাননি।

আরও পড়ুন: এইচপিভি টিকা পাবে বিশ্বনাথের ১৩ হাজার কি’শো’রী

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পশু চিকিৎসক সাদেকুল ইসলাম বলেন, অনাথ হিসেবে মেয়েটিকে আমি আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমি তাদের ভালো করতে গিয়ে তারা আমার পিছু নিছে। তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়ার সুবাদে পরিচয়। আগের বিয়ে বনিবনা না হওয়ায় সে ডির্ভোস নেয়। পরে অনত্র বিয়ে দিতে চাইলে আমি প্রস্তাব দেই। তারাও রাজি হন। আমার স্ত্রী-সন্তান আছে। সে কারণে এ বিয়ের বৈধ কোন ডকুমেন্ট করা যায়নি। আর মানবিক কারণে আমি তাকে বিয়ে করি। পরে তাদের সাথে নানা বিষয়ে সমস্যা দেখা দেয়ায় তাদের সম্মতি দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ করে লিখিত ভাবে আমরা পৃথক হই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা: নাহিদ নাওরনি সুুলতানা বলেন, বিষয়টি আমার অফিসের এক স্টাফের কাছ থেকে ইতিপূর্বে শুনেছি। এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। বর্তমানে আমি ট্রেনিংয়ে আছি। অফিসে ফিরে বিষয়টি দেখছি।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪