চার বছর ধরে বন্ধ থাকা সিলেট-ছাতক রেলপথের সংস্কার কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হবে। ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই রেলপথ সংস্কারের মাধ্যমে পুনরায় চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে ছাতক বাজার রেল স্টেশন ও কংক্রিট স্লিপার প্ল্যান্ট পরিদর্শনকালে এ তথ্য জানান রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন।
মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্ল্যান্টে ১৫ হাজার স্লিপার উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আনা হয়েছে। প্রাথমিক উৎপাদন শেষে পরবর্তীতে আরও কাঁচামাল এনে উৎপাদন বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দেড় বছর সময় লাগতে পারে। কাজ শেষ হলে সিলেট-ছাতক রেলপথ পুনরায় চালু হবে। এটি সিলেট অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি দূর করবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আনবে।
ছাতক-ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত এটি চালুর কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাথর পরিবহনের জন্য রোপওয়ে ব্যবহারে আগ্রহী হলে দরপত্রের মাধ্যমে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদন অনুযায়ী, সংস্কার কাজ শুরু হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এটি চালু হলে সিলেট অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।
এদিকে, ১৯৫৬ সালে নির্মিত সিলেট-ছাতক রেলপথ সিলেট অঞ্চলের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম ছিল। একসময় ছাতক থেকে চুনাপাথর, সিমেন্ট, স্লিপার, বালু এবং বোল্ডার পরিবহনে এই রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
তবে করোনা মহামারি শুরু হলে সারা দেশের অন্যান্য রেলপথের মতো এই পথটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনার পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রেল চলাচল স্বাভাবিক হলেও ছাতক-সিলেট রেল যোগাযোগ হয়নি আর চালু।
২০২২ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট-ছাতক রেলপথের প্রায় ১৩ কিলোমিটার অংশ তীব্র স্রোতের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেললাইনের নিচের মাটি সরে গিয়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয় এবং রেললাইন উপড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এই রেলপথ বন্ধ থাকায় সিলেট অঞ্চলের মানুষের বেড়ে যায় ভোগান্তি।