সৌদি আরবের প্রাচীন জনপদ তায়েফে অবস্থিত আল কানতারা মসজিদ, যা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর স্মৃতিবিজড়িত স্থান হিসেবে পরিগণিত, এখন ইসলামী ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক হাজার বছরের পুরনো এই শহরে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার লক্ষ্যে মহানবী (সা.) তায়েফে গমন করেন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই স্থানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন বলে ধারণা করা হয়।
প্রায় ১৭০ বছর আগে উসমানীয় শাসক শরিফ আবদুল মুত্তালিব বিন গালিব মহানবী (সা.) এর স্মৃতি অম্লান রাখতে আল কানতারা মসজিদ নির্মাণ করেন। ‘মাদহুন মসজিদ’ ও ‘কাবিল মসজিদ’ নামেও পরিচিত এই মসজিদটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এর আব্বাসীয় নকশা মসজিদটিকে প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে স্থান দিয়েছে, যা প্রতিবছর অসংখ্য দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করে।
মহানবী (সা.) এর তায়েফ সফরের সময় তিনি মক্কার দুই সরদার উতবা ও শায়বার মালিকানাধীন একটি বাগানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। তাঁর অবস্থা দেখে তারা দয়া করে আদ্দাস নামের এক দাসের মাধ্যমে আঙুর পাঠান। মহানবী (সা.) এর কথায় আদ্দাস এতটাই মুগ্ধ হন যে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক সেই বাগানের কিছু অংশ এখনো মসজিদের বিপরীতে বিদ্যমান, যা আজও দর্শকদের স্মৃতিরূপে আকৃষ্ট করে।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর যন্ত্রণার কঠিন বাস্তবতা – মুমিনের জীবনের এক অবধারিত সত্য
ঐতিহাসিকদের মতে, মক্কায় স্ত্রী খাদিজা (রা.) ও চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর পর মুসলমানদের ওপর নির্যাতন বাড়লে, মহানবী (সা.) ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফে গমন করেন। তবে তায়েফের অধিবাসীরা তাঁর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে এবং শিশু-কিশোরদের লেলিয়ে দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। মারাত্মকভাবে আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।
সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষ মসজিদটির ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বজায় রাখতে সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে প্রতি বছর অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি নবীজি (সা.) এর স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানটি দর্শনের উদ্দেশ্যে আসেন।