সাত বছর আগে লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড, যা নাড়া দিয়েছিল সারা বিশ্বকে, সেই ভবন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত একটি কোম্পানির অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণে সমালোচনার মুখে দায়িত্বের কিছু অংশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ব্রিটিশ সরকারের উপমন্ত্রী বিশ্বনাথের রুশনারা আলী।
স্কাই নিউজের বরাতে জানা গেছে, গৃহায়ণ, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি রুশনারা আলী ভবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়িত্বে আর থাকবেন না। তবে তিনি গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষের আবাসনের দায়িত্বসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবেন।
গ্রেনফেল ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সংগঠন ‘গ্রেনফেল ইউনাইটেড’ রুশনারার অপসারণের দাবি তোলার পর তিনি এই পদক্ষেপ নেন বলে সানডে টাইমস জানিয়েছে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ এমপি বলেছেন, গ্রেনফেল অগ্নিকাণ্ডে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের অনুভূতি তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন এবং সরকার ও কমিউনিটির মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
স্কাই নিউজ প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, নিয়মিতভাবে বার্ষিক পলিসি ফোরাম ‘ফ্রাঙ্কো-ব্রিটিশ কলক’-এ অংশ নিতেন রুশনারা আলী। এই ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ছিলেন সেন্ট-গোবাইনের সাবেক চেয়ারম্যান পিয়েরে-আন্দ্রে ডি চ্যালেন্ডার, যার কোম্পানি গ্রেনফেল টাওয়ারে ব্যবহৃত দাহ্য ইনসুলেশন তৈরি করেছিল।
২০১৭ সালের ১৪ জুন, ভোররাতে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে ৭২ জন নিহত হন। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে লন্ডনের সবচেয়ে মারাত্মক আবাসিক অগ্নিকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের অভিযোগ
রুশনারা আলী এক বিবৃতিতে জানান, “ভবনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে আরেকটি ট্র্যাজেডি যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করাই আমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।” ভবন সুরক্ষা বিষয়ক দায়িত্ব অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করার মাধ্যমে এই উদ্দেশ্য আরও ভালোভাবে পূরণ করা যাবে বলে তিনি মনে করেন।
রুশনারা আলী লেবার পার্টির হয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের ভুরকি গ্রামে জন্ম নেওয়া রুশনারা যুক্তরাজ্যে গিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও দর্শনে ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০১০ সালে প্রথম বাঙালি এমপি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।