মুসলমানদের জন্য আল্লাহর দান হলো সম্পদ, যা সঠিকভাবে ব্যয় করা আবশ্যক। ইসলামে উল্লেখ রয়েছে “আল্লাহ তোমাদেরকে যা দান করেছেন তা সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে” (সুরাহ আল-বাকারা, আয়াত ২৬৭)। ইসলাম অনুসারে সম্পদের ব্যবহার যেন আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী হয়। এই কারণে কিছু নীতিমালা রয়েছে যা মুসলমানদের জন্য নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করে। এসব নীতিমালার মাধ্যমে সম্পদের সঠিক ব্যবহার, সৎ উদ্দেশ্যে ব্যয় এবং অপব্যয়ের প্রতিরোধ নিশ্চিত করা হয়। জাকাত, ফিতরা এবং কোরবানি সহ বিভিন্ন দানের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন মেটানো, আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সহায়তা করা এবং দ্বিন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নিচে উল্লেখিত নীতিমালাগুলো অনুসরণ করে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করতে পারবেন।
১. সম্পদের ওপর শরিয়তের যে দায়িত্বগুলো রয়েছে সেগুলো ইখলাসের সঙ্গে পালন করতে হবে। এর মধ্যে জাকাত, ফিতরা, কোরবানি প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত।
২. নিজ ও পরিবারের প্রয়োজন এবং অন্যান্য অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সম্পদ ব্যয় করা হবে।
৩. আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, অতিথি, মুসাফির, এতিম, মিসকিন এবং বিধবাদের প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করতে হবে।
৪. অপব্যয় থেকে দূরে থাকতে হবে। ইসলামে যেসব ক্ষেত্রে ব্যয় করা নিষিদ্ধ সেগুলোতে ব্যয় করা যাবে না। অপব্যয় হারাম এবং অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।
৫. অমিতব্যয় বা অপচয় নিষিদ্ধ। বৈধ খাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করা ইসলামে অনুমোদিত নয়।
৬. কার্পণ্য করা উচিত নয়। বৈধ স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় না করা কৃপণতা হিসেবে গণ্য হয়, যা ইসলামে অবাঞ্ছিত।
৭. ব্যয়ের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা জরুরি; কম বা বেশি কোনোটাই গ্রহণযোগ্য নয়।
৮. দ্বিন ইসলামের সুরক্ষা এবং দাওয়াত, তাবলিগ ও ধর্ম প্রচারের কাজে উদারভাবে ব্যয় করা ইবাদত।
৯. নফল ও সওয়াবের জন্য সম্পূর্ণ সম্পদ ব্যয় করার ক্ষেত্রে নীতি হলো, যার ঈমান মজবুত এবং অন্তর প্রশস্ত সে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দিতে পারে। কিন্তু যিনি এভাবে ব্যয় করার সামর্থ্য রাখেন না তার জন্য এভাবে সম্পদ ব্যয় করা উচিত নয়, কারণ এতে ঈমানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। দানের জন্য সর্বাধিক এক-তৃতীয়াংশ সম্পদের অসিয়ত করাই উত্তম।
১০. সাধারণভাবে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করা উচিত নয়।