প্রতিটি ধর্মীয় শাস্ত্রের দুটি দিক রয়েছে, একটি জ্ঞানগত এবং অপরটি প্রায়োগিক। এই দুই দিকের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ঈমান এবং আল্লাহর পরিচয়সংক্রান্ত জ্ঞান (ইলমে মারেফাত) সঙ্গে আমলের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ বিশ্বাস করা ঈমানের মূল দিক। মানুষের আমলের ওপর এটি বিশেষ প্রভাব ফেলে। যার আল্লাহর ওপর বিশ্বাস যত শক্তিশালী, তার আমলের প্রতিদানও তত বেশি হয়। সাহাবায়ে কিরাম (রা.) এবং আল্লাহর প্রিয় বন্ধুরা যে ইবাদত করেছেন তা আমাদের ইবাদতের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত।
সাহাবায়ে কিরামের ইবাদতের বিশেষত্ব হলো তাদের খাঁটি ঈমান ও নিষ্ঠা। তাদের দুই রাকাত নামাজ আমাদের দুই লাখ রাকাত নামাজের চেয়ে উত্তম। কারণ তাদের নামাজে ঈমান ও খাঁটি ইখলাসের পরিমাণ বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “একজন সাহাবি যদি আধা সের খাদ্য দান করেন, তা উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণ দান করার চেয়ে বেশি সওয়াবের উপযুক্ত।”
আলেমরা বিভিন্ন কারণে এই পার্থক্যের কথা বলেন, কখনো আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, কখনো খাঁটি নিয়তের কথা। এসবই ইলম ও মারেফাত থেকে আসে, যা সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় ছিল। কবি বলেছেন, “আমাদের বাক্য ভিন্ন হলেও, তোমার সৌন্দর্য একই।” এর মানে হলো ইলম ও মারেফাতের মাধ্যমেই তারা দৃঢ় বিশ্বাস অর্জন করেছেন।
আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রথমবার দেখেই জানতেন যে, তিনি মিথ্যাবাদী নন। যদিও পরবর্তীতে গভীর ভালোবাসা জন্মেছিল, প্রথম পরিচয়েই তার সত্যের প্রতি আগ্রহ তাকে মহানবীর পরিচয় উপলব্ধিতে সাহায্য করেছে। পবিত্র কোরআনেও এর সমর্থন রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, “তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাবে দেখা যায়।” (সুরা: ফাতহ, আয়াত: ২৯)
আরও পড়ুন :: ধর্মকে অগ্রাধিকার দিলে দেশ উন্নতি শিখরে পৌঁছানো সম্ভব: শায়খ আহমাদুল্লাহ
সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর ইলম ছিল খাঁটি। তাদের অনুসরণ করা আমাদের সৌভাগ্য। তারা মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্যে ছিলেন, ঈমান ও ইসলামে অগ্রগামী এবং তাদের সম্মুখে কোরআন নাজিল হয়েছিল। তাদের আল্লাহর ভালোবাসায় সর্বোচ্চ নজরানা পেশ করার উদাহরণ স্থাপন করেছেন।