বিশ্বনাথ নিউজ২৪:: সিলেটের শাহপরাণ (রাহ.) মাজার এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপ বিরোধী আলেম-জনতা ও ওরসপন্থীদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে, প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০-৩৫ জন আহত হন। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, তিন দিন ধরে মাজারে বার্ষিক ওরস চলছিল। ওরস শুরুর আগে সিলেটের আলেমসমাজ মাজার কমিটির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে ওরসের সময় অসামাজিক কার্যকলাপ না হওয়ার জন্য সতর্ক করে। কমিটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটবে না। ওরসের সময় আলেমদের একটি দল মাজার এলাকায় অবস্থান করে পরিস্থিতির উপর নজরদারি করছিল। সংঘর্ষের রাতে তারা মসজিদের সিঁড়িতে বসে কুরআন তিলাওয়াত ও গজল করছিলেন। তখন কিছু লোক, যারা ওরস উপলক্ষে সেখানে এসেছিল, তাদের ওপর আক্রমণ করে। মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন, আর হামলাকারীরা বাইরে থেকে হুমকি দেয়।
পরে, জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকার লোকজন বিষটি জানতে পেরে শতাধিক মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্ধার করে এবং ওরসপন্থীদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং উভয় পক্ষের ৩০-৩৫ জন আহত হন। ভোরবেলা সেনাবাহিনীর একটি দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন :: সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক এনামুল করিম
আলেমদের অভিযোগ, শুরুতে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও সংঘর্ষ শুরু হতেই তারা সরে যায়। তারা দাবি করেন যে, তৃতীয় একটি পক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু লোককে উস্কে দিয়ে পরিস্থিতি উত্তেজিত করে। এদের মধ্যে মাদকসেবী ও মাথায় লাল কাপড় পরা লোকজনও ছিল, যাদের হামলায় আলেমরা আক্রান্ত হন। মাজার কমিটিরও এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মাজার কমিটির কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
শাহপরাণ থানার ওসি হারুন-অর-রশীদ চৌধুরী জানান, মাজারে উপস্থিত কিছু পাগল, ফকির এবং আলেমদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ফলে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে মাজারে কোনো পরিকল্পিত হামলা হয়নি। পুলিশ তদন্ত করছে, তবে এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।